• East Bengal: শংকর, ডাঃ সুকুমার মুখার্জি ও সত্যম রায়চৌধুরীকে সম্মান জানাল ইস্টবেঙ্গল
    আজকাল | ২৩ মার্চ ২০২৩
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নব রূপকার পল্টু (দীপক) দাসের ২২তম প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুণী ব্যক্তিদের সম্মানিত করা হল। বুধবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে 'দীপক জ্যোতি দিশারি' সম্মানে ভূষিত করা হয় টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির আচার্য সত্যম রায়চৌধুরীকে। এই শিক্ষাবিদকে সংবর্ধিত করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। 'দীপক জ্যোতি জীবনকৃতি সম্মান'  প্রদান করা হয় বিশিষ্ট সাহিত্যিক মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায় এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুকুমার মুখার্জিকে। অনুষ্ঠানে
    ছিলেন শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, সমরেশ চৌধুরী এবং তাপস রায়। সত্যম রায়চৌধুরী নিজে মোহনবাগানের সমর্থক। কিন্তু ময়দানের দুই জায়ান্ট ক্লাব ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের সদস্য। সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, 'মোহনবাগান সমর্থক হয়ে ইস্টবেঙ্গলের থেকে এই সম্মান পেয়ে আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত। তাই এই পুরস্কার স্পেশাল। যাঁদের খেলা দেখে বড় হয়েছি, বেড়ে উঠেছি, ফুটবলকে ভালবেসেছি, তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। সবাইকে আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা। ফুটবল এবং বাঙালিকে আলাদা করা যায় না। আমাদের মননে ফুটবল। বাঙালি ১০০ বছরের ওপর ফুটবল নিয়ে লড়াই করছে। এটা মনে হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম লড়াই।

    লড়াই করে আমরা ময়দানে টিকে আছি। আমাদের রক্তে ফুটবল। কেউ মোহনবাগান, কেউ ইস্টবেঙ্গল, কেউ মহমেডান।‌ ৭০-৮০ দশকে ফুটবল দেখে যখন বড় হয়েছি, টিভি ছিল না। অন্য লোকের বাড়িতে গিয়ে ঘর অন্ধকার করে ফুটবল দেখতে হত।  যাঁর স্মৃতিতে এই অনুষ্ঠান, তিনি আমাদের সবার প্রিয় পল্টুদা। ফুটবলের সম্রাট। মৃত্যু পর্যন্ত রাজ্যপাট আগলে রেখেছেন। পল্টুদা মানে অন্য ক্লাব থেকে ফুটবলার ছিনিয়ে আনা, লতা মঙ্গেশকরকে এনে প্রোগ্রাম করানো। উনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের গ্যালারি তৈরি করেছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের রূপকারের নামাঙ্কিত পুরস্কার গ্রহণ করতে পেরে আমি ধন্য।' ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধারও ইচ্ছাপ্রকাশ করেন টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। এই প্রসঙ্গে সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, 'আমাদের ছোটদের অ্যাকাডেমি আছে, স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি আসছে। যদি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারি, একসঙ্গে চলতে পারি, তাহলে দুই পক্ষের জন্যই বড় ব্যাপার হবে। আমি এবং আমার পরিবার মোহনবাগানের সমর্থক। কিন্তু ২০ বছর আগে নীতুদা আমাকে বলেন ইস্টবেঙ্গলের আজীবন সদস্য হতে হবে। আমি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মেম্বার। যেকোনও অনুষ্ঠানে থাকব। আমার কাছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান সমার্থক। চাইব দেশের ফুটবল আরও ভাল হোক। আমি ফুটবলকে সাপোর্ট করি এবং করব। আশা করব ইস্টবেঙ্গল আরও ভাল টিম তৈরি করবে এবং ভাল খেলবে।' 
     ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তিত  ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'এটা অঙ্গীকারের সভা।

    ইস্টবেঙ্গলের এই পারফরম্যান্স আমাকেও ভাবাচ্ছে। ক্লাব যাতে ট্রফি পায় সেটা দেখা আমাদেরও কর্তব্য। আমাদের ক্লাবের খারাপ সময় যাচ্ছে। সমর্থকরা আশা নিয়ে মাঠে যায়, নিরাশ হয়ে ফিরে আসে। মনে হয় পল্টুদা থাকলে এরকম হত না। পল্টুদা এমন একটা ম্যাজিক দেখাত যে আমরা আইএসএল জিতে জেতাম। আমরা লড়ব এবং জিতব। আমরা সূর্য সেনের বংশধর। কোনও কর্পোরেটের ভরসায় নয়, নিজেদের ভরসায় জিতব।' এই মঞ্চ থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার লাল হলুদের। শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, '৪০- এর সঙ্গে ২০ -র লড়াই চলে না। ৪০ খরচ করতে হবে। যাঁদের জার্সি পরার যোগ্যতা আছে তাঁদের নিতে হবে, ভাল কোচ নিয়ে আসতে হবে। আগামী বছর থেকে ঘুরে দাঁড়াব এবং দু'বছরের মধ্যে আমরা চ্যাম্পিয়ন হব।' লাল হলুদের শীর্ষকর্তা আকার-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে ইনভেস্টর বদলাতেও পিছপা হবেন না। 'পল্টুদা তুমি আছো, তুমি থাকবে' অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের সহ সভাপতি অজয় চ্যাটার্জি, সচিব কল্যাণ মজুমদার, শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার, কার্যকরী কমিটির সদস্য শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত প্রমুখ। এছাড়াও ছিলেন একঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলার। এই তালিকায় রয়েছেন শ্যাম থাপা, ভাস্কর গাঙ্গুলি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, অতনু ভট্টাচার্য, অমিত ভদ্র, তরুণ দে, সুমিত মুখার্জিরা। সদ্য প্রয়াত ক্রীড়াসাংবাদিক অভিজিৎ সরকারের পরিবারের হাতে দু'লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
  • Link to this news (আজকাল)