• সম্পর্কের টানাপোড়েনে প্রেমিকাকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে খুন, মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ আদালতের
    প্রতিদিন | ২৩ মার্চ ২০২৩
  • সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: পরকীয়া সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরে বিবাহিত প্রেমিকাকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে খুন। দোষীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের (দ্বিতীয়) বিচারক। বুধবার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন তিনি।

    ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল। দোষী সমর পাত্র নামে ওই ব্যক্তি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা থানার পাতিবুনিয়ার বাসিন্দা। নামখানা থানার রাজনগরের বাসিন্দা বছর বত্রিশের এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়া ছিল তার। ওই মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার বকখালিতে গিয়েছিল সমর। একটি হোটেলে আবাসিক হিসেবে ওঠে। ওই মহিলা ও সমর দু?জনেই বিবাহিত। মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে সেসময় কেরালায় ছিলেন। মহিলার দুই শিশুসন্তানও রয়েছে।

    হোটেলের ম্যানেজার ও কর্মীরা পরদিন সকালে হোটেলের ওই ঘরে খাবার দিতে যান। তিনি মহিলার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ তদন্ত করতে এসে দেখে হোটেলের একটি জানলা ভাঙা রয়েছে। মহিলাকে খুন করে ওই ভাঙা জানলা দিয়েই খুনি পালিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে। আদালতের সরকারি আইনজীবী অমিতাভ রায় জানান, হোটেল ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার তদন্তকারী অফিসার অর্পণ নায়েক তদন্তে নামেন। প্রায় দেড়মাস পর অভিযুক্ত সমর পাত্র গ্রেপ্তার হয়।

    ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা রুজু হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ নিশ্চিত হয় পরকীয়া সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরে মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সমরই। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো ছুরি ও কাচের টুকরো দিয়ে মহিলার শরীরের বেশ কিছু শিরা কেটে দেয়। ফরেনসিক ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ-সহ অন্যান্য মোট ১৮ জন সাক্ষী বয়ান দেন। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক সমরকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বুধবার খুনে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সমর পাত্রকে বিচারক মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন। আগামী এক মাসের মধ্যে ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বিচারক তাঁর রায় ঘোষণা করতে গিয়ে এই ঘটনাকে বিরলতম নৃশংস হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)