• 'দাগি' জনপ্রতিনিধির তালিকায় নাম রাহুলের, সাংসদ পদ খারিজে কী বলছে আইন?
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৩
  • প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে দোষী সাব্যস্ত রাহুল গান্ধী। তাঁকে দু'বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে সুরাটের জেলা ও দায়রা আদালত। এবার কি তবে সাংসদ পদ খোয়াতে চলেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি?

    সংবিধান বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই নিয়ে দু'রকমের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। ওই আইনের ৮(৩) ধারা অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি ফৌজদারী অপরাধে দু'বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজা পেলে, রায় ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি থাকার অধিকার হারাবেন তিনি।

    শুধু তাই নয় ওই আইনের ধারায় আরও বলা হয়েছে, জেল থেকে মুক্তির পর ছ'বছর পর্যন্ত কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না ওই ব্যক্তি। কিন্তু এই আইনের ৮(৪) ধারায় অন্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

    ১৯৫১-র আইনের ৮(৪) ধারায় বলা হয়েছে, রায় ঘোষণার সময় যদি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি থাকেন, তা হলে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সদস্যপদ খারিজ করা যাবে না। সাজা ঘোষণার পরবর্তী তিনমাস বা উচ্চতর আদালতে রায় পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি থাকতে পারবেন তিনি।

    জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের এই ৮(৪) নম্বর ধারার বিরুদ্ধে পরবর্তীকালে জনস্বার্থ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন লিলি টমাস ও এস এন শুক্লা। ২০১৩-য় এই নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রায় দেন বিচারপতি এ কে পট্টনায়ক এবং বিচারপতি এস জে মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ।

    সেই রায়তে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৪) ধারাকে 'অসংবিধানিক' বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট। নিম্ন আদালতে রায় কার্যকর হওয়ার দিন থেকেই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি থাকার অধিকার হারাবেন বলে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।

    প্রসঙ্গত, রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রাহুল গান্ধীর সাজা কার্যকর ৩০ দিনের জন্য মুলতুবি করেছে সুরাটের আদালত। শুধু তাই নয়, জামিনও পেয়েছেন ওয়ানাডের কংগ্রেস সাংসদ।

    রাহুলের আইনজীবী বাবু মঙ্গুকিয়ার দাবি, "নিম্ন আদালতের সাজা এখনই কার্যকর হচ্ছে না। ফলে সাংসদ পদ খারিজের প্রশ্নই নেই। তাছাড়া এই ধরনের মামলায় রায় ঘোষণার পর জামিন দেওয়া হলে, জনপ্রতিনিধিত্ব খারিজের নজির নেই।"

    উল্লেখ্য, ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্টের রায় ঠেকাতে অধ্যাদেশ আনার পরিকল্পনা করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন UPA সরকার। ওই সময় রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে, অধ্যাদেশের খসড়া বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন রাহুল গান্ধী। মূলত, তাঁর চাপেই অধ্যাদেশ ফিরিয়ে নিয়েছিল UPA সরকার।
  • Link to this news (এই সময়)