• একরাত কয়েদ থেকেই মুক্তি! ইন্দিরার মতোই সাজা এড়াবেন রাহুল গান্ধী?
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৩
  • প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর একদিনের জন্য কয়েদ থাকতে হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীকে। সেই ঘটনার ৪৬ বছর পর এবার কি জেলে যেতে হবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাতি রাহুলকে? গুজরাতের সুরাট আদালতের রায়ের পর এই নিয়ে চড়ছে পারদ।

    প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৭৫-এ জারি করেন ইন্দিরা গান্ধী। ১৯৭৭-তে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

    জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার হতেই ৭৭-র লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয় । কেন্দ্রে সরকার গঠন করে জনতা পার্টি। প্রথম অ-কংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মুরারজি দেশাই।

    ওই বছরই অক্টোবর মাসে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সদ্য ক্ষমতা হারা । একদিন পরই অবশ্য নিঃশর্ত মুক্তি পান তিনি।

    ১৯৭৭-র ৩ অক্টোবর গ্রেফতারির পর দিল্লিতে পদস্থ আমলাদের মেসে রাখা হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীকে। একরাত সেখানে কাটান তিনি।

    পরবতী অর্থাৎ ৪ অক্টোবর আদালতে পেশ করতে অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা বিচারক আর দয়াল তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দেন। সঙ্গে সঙ্গে পুত্র সঞ্জয় গান্ধীর সঙ্গে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।

    প্রসঙ্গত, পূর্বতন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। যা দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দেন জনতা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চরন সিং।

    স্বাধীনতার পর ইন্দিরা গান্ধীই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, প্রধানমন্ত্রী থাকা সত্ত্বে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ইন্দিরার বাবা তথা দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর অবশ্য দীর্ঘ জেলযাত্রার ইতিহাস রয়েছে।

    ব্রিটিশ ভারতে বিভিন্ন সময় কংগ্রেসের হয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হন পণ্ডিত নেহরু। ফলে লম্বা কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করতে হয়েছিল তাঁকে।

    ওই সময় জেলে বসেই মেয়ে ইন্দিরাকে একাধিক চিঠি দিতেন নেহরু। যা পরবর্তীকালে বই হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।

    অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় কংগ্রেস সাংসদ দোষী সাব্যস্থ করেছে সুরাটের দায়রা আদালত। তাঁকে দু'বছরের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।

    ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কর্নাটকের সভায় রাহুল গান্ধী বলেন, "সব চোরদের পদবি মোদী হয় কেন?" এর পরই IPL কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত লোলিত মোদী ও ব্যাঙ্কের ঋণ খেলাপি মামলায় পলাতক নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর তুলনা টানেন তিনি।

    এর পরই ওয়ানাডের কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন গুজরাতের পদ্ম নেতা পূর্ণেশ মোদী। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ ও ৫০০ ধারায় অপরাধের অভিযোগ আনেন তিনি।

    স্বাধীনতার পর মাত্র একদিনের জন্য ইন্দিরার গ্রেফতারি বাদ দিলে, নেহরু-গান্ধীর পরিবারের কাউকেই কখনও জেলে যেতে হয়নি। রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রেও জেলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই দাবি করেছেন আইনজ্ঞরা।

    ইতিমধ্যেই তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। পাশাপাশি, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদনের জন্য রাহুল গান্ধীকে এক মাস সময় দিয়েছেন বিচারক।
  • Link to this news (এই সময়)