• Trinamool Congress : ১০০ দিনের কাজ: বকেয়ার দাবিতে সরব তৃণমূল
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৩
  • এই সময়, নয়াদিল্লি: ১০০ দিনের কাজের বকেয়া ৭৫০০ কোটি টাকার দাবিতে আগামী সপ্তাহেই কলকাতায় আম্বেদকর মূর্তির সামনে ধর্নায় বসছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে এই টাকা দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে৷ বাংলার অভিযোগ, ওই অনুরোধপত্রের পরেও মোদী সরকার এক টাকাও দেয়নি রাজ্যকে৷ সেই বঞ্চনার প্রতিবাদেই কলকাতায় ধর্নায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী৷

    এই আবহে বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লিতে দাঁড়িয়ে আরও একবার মনরেগা খাতে বকেয়া টাকা দেওয়ার দাবিতে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল৷ সংসদ সংলগ্ন বিজয় চকে সাংবাদিক বৈঠক করে এদিন দুই বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এবং ডেরেক ও'ব্রায়েন নিশানা করেন মোদী সরকারকে৷ ডেরেকের অভিযোগ, '১০০ দিনের কাজের (মনরেগা) খাতে সারা দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি কাজ হয়েছে বাংলায়।

    ৩৪ কোটি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে, ১ কোটির বেশি জব কার্ড আছে বাংলায়, অথচ বাংলার ৭৫০০ কোটি টাকা বকেয়া রাখা হয়েছে৷ রাজ্যের মাত্র ৩ শতাংশ পরিবার পেয়েছে মনরেগা প্রকল্পের মজুরি, এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করছে বাংলার সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে মোদী সরকার৷' সৌগত রায়ের দাবি, 'মনরেগা একটি বিশেষ আইন, যার ২৭ নম্বর ধারার ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাজ্যের বরাদ্দ আটকে দিয়েছে সরকার।

    এমনকী, কেন্দ্রীয় বাজেটেও ওই খাতে অনেকটাই কমানো হয়েছে বরাদ্দ। গত বছর এই খাতে ৭২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, যা এ বছর কমে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার কোটিতে। এর থেকে নিষ্ঠুর কিছু হয় না।' মনরেগা খাতে কী ভাবে মোদী সরকার বাংলার সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করছে, তার বিবরণ তুলে ধরে ডেরেক বলেন, ২০২১ সালে সংশ্লিষ্ট খাতে শেষবার অর্থ বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র। তার পর থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। অতীতে বহুবার নানা নথি দেওয়া থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার চিঠি লিখলেও একটি টাকাও ঠেকায়নি কেন্দ্রীয় সরকার।

    এমনকী, আগামী অর্থবর্ষেও এই খাতে বাংলার বরাদ্দ শূন্যই হতে চলেছে বলে খবর। ডেরেক খোলাখুলি জানিয়েছেন, 'মনরেগা প্রকল্প কোনও সরকারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এটা মানুষের প্রকল্প, গরিব অসহায় খেটে-খাওয়া মানুষের অধিকার। কেউ তা কেড়ে নিতে পারবে না। মানুষের সেই অধিকারের দাবিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্নায় বসবেন কলকাতায়।'

    পাশাপাশি, আদানি প্রতারণা ইস্যুতেও এদিন প্রতিবাদের সুর সপ্তমে নিয়ে গিয়েছে জোড়াফুল৷ অবিলম্বে গৌতম আদানিকে গ্রেপ্তার করতে হবে, এ দাবি আগেই তুলেছিল তৃণমূল৷ প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং গৌতম আদানির ছবি দিয়ে 'অ্যারেস্ট আদানি' টুপিও ছাপিয়েছে তৃণমূল৷ এদিন সেই টুপি নিয়েই তৃণমূল সাংসদরা হাজির হন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের অফিসে৷

    এই দলে ছিলেন সাংসদ শান্তনু সেন, প্রতিমা মণ্ডল, মৌসম নূর, আবির বিশ্বাস ও খলিলুর রহমান৷ নির্মলা সেই সময়ে দপ্তরে ছিলেন না৷ তৃণমূল সাংসদরা 'অ্যারেস্ট আদানি' দাবি-সহ একটি চিঠি এবং স্মারক টুপি উপহার দিয়ে আসেন অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে৷ অন্য দিকে, রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, শান্তা ছেত্রী, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও বেশ কয়েকজন সাংসদ যান ইডি ও সিবিআইয়ের দপ্তরে। দুই সংস্থার অধিকর্তাদের সঙ্গে দেখা করাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। যদিও তাঁদের কোনও দপ্তরেই ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।

    এদিন তৃণমূল তোপ দেগেছে মেহুল চোকসির রক্ষাকবচ প্রসঙ্গকে হাতিয়ার করেও৷ ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস থেকে মেহুল চোকসির নাম সরে যাওয়ায় যে ভাবে তিনি নতুন রক্ষাকবচ পেয়েছেন, তা মোদী সরকারের মুখ ও মুখোশ আলাদা করে দিয়েছে, এমনটাই অভিযোগ সৌগতর৷
  • Link to this news (এই সময়)