• হাতি রুখতে মমতার কাছে আট দফা দাবি
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৩
  • এই সময়, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রায় দিনই হাতির হানায় মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ মানুষের। বুনো হাতি থেকে রক্ষে নেই ঘর-বাড়ি বা জমির ফসলের! এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আট দফা দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিল 'জঙ্গলমহল স্বরাজ মোর্চা'।

    ঝাড়গ্রাম জেলার মধ্যে ঝাড়গ্রাম, খড়গপুর ও মেদিনীপুর তিনটি বনবিভাগ রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জঙ্গল ঘেরা। রয়েছে ফসলের জমিও। জঙ্গলে হাতির পাল খাবার না পেয়ে লোকালয়ে হানা দিয়ে জমির ফসল ও সব্জি খাচ্ছে। ফলে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে বেশি সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষজন।

    'জঙ্গলমহল স্বরাজ মোর্চা'র কেন্দ্রীয় সভাপতি অশোক মাহাতো বলেন, 'জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জঙ্গলমহলের হাতি সমস্যা সমাধানের জন্য আট দফা দাবি জানিয়েছি।'

    এ দিন 'জঙ্গলমহল স্বরাজ মোর্চা' সংগঠনের পক্ষ থেকে যে দাবিগুলি জানানো হয়, তা হলো, হাতির হানা রুখতে ঝাড়গ্রাম জেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ব্যবস্থা করতে হবে, হাতির হানায় মৃতের পরিবারের আর্থিক ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি করে ১০ লাখ টাকা করতে হবে, হাতির হানায় মৃতের পরিবারের একজন সদস্যকে দ্রুত সরকারি চাকরি দিতে হবে, ২০০৮ সাল থেকে যে সব পরিবারের সদস্যরা হাতির হানায় মারা গিয়েছে, তাদেরকেও সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

    এছাড়া, বাজারমূল্য অনুযায়ী জমির ধান ও ফসলের ক্ষতিপূরণ দ্রুত দেওয়া, হাতি তাড়ানোর জন্য জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীদেরকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া, হাতির খাবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলের গাছ ও পুকুর খনন করার মতো দাবিও রয়েছে তালিকায়।

    এ দিকে, ২০২২ সালের ১৯ অগস্ট হাতির আক্রমণে খড়্গপুর বনবিভাগের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের বাঁকড়া বিটের চুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুরাম বিশ্বাস, শশাঙ্ক হালদারের মাটির ঘর ভেঙে দিয়েছিল বুনো হাতির দল। ওই সময় এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে তাঁদের বাড়ি তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন। তারপরেই দু'টি পরিবারের মোট ১১জন সদস্যকে বাঁকড়ার কর্মতীর্থে স্থানান্তরিত করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

    গত তিন মাস আগে সংবাদমাধ্যমের কাছে রাজ্যের বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা ঘরছাড়া দু'টি পরিবারের কথা শুনে সমাধানের 'আশ্বাস' দিলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। যার ফলে বাড়ি ফিরতে পারছে না দু'টি পরিবার।

    খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, 'দু'টি পরিবার সত্যিকারের দুঃস্থ। আমরা বনদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রথমবার ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলাম। তারপর দু'টি পরিবারের বাড়ির জন্য সাঁকরাইলের বিডিও-কে অনুরোধ করেছিলাম। বর্তমান পরিস্থিতি জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।'
  • Link to this news (এই সময়)