কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালি বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই
নিখিলেশ প্যারিসে মইদুল ঢাকাতে
নেই তারা আজ কোন খবরে
গ্র্যান্ডের গিটারিষ্ট গোয়ানিজ ডিসুজা
ঘুমিয়ে আছে যে আজ কবরে
কাকে যেন ভালোবেসে
আঘাত পেয়ে যে শেষে
পাগলা গারদে আছে রমা রায়
অমলটা ধুকছে দুরন্ত ক্যান্সারে
জীবন করে নি তাকে ক্ষমা হায়
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেলো সোনালি বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই
সুজাতাই আজ শুধু সবচেয়ে সুখে আছে
শুনেছি তো লাখপতি স্বামী তার
হীরে আর জহরতে আগাগোড়া মোড়া সে
গাড়ি বাড়ি সব কিছু দামী তার
আর্ট কলেজের ছেলে নিখিলেশ স্যান্যাল
বিজ্ঞাপনের ছবি আঁকত
আর চোখ ভরা কথা নিয়ে
নির্বাক শ্রোতা হয়ে
ডিসুজাটা বসে শুধু থাকত
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
একটা টেবিলে সেই তিন চার ঘন্টা
চারমিনার ঠোটে জ্বলত
কখনও বিষ্ণু দে কখনও যামিনী রায়
এই নিয়ে তর্কটা চলত
রোদ ঝড় বৃষ্টিতে যেখানেই যে থাকুক
কাজ সেরে ঠিক এসে জুটতাম
চারটেতে শুরু করে জমিয়ে আড্ডা মেরে
সাড়ে সাতটায় ঠিক উঠতাম
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কবি কবি চেহারা কাঁধেতে ঝোলানো ব্যাগ
মুছে যাবে অমলের নামটা
একটা কবিতা তার হল না কোথাও ছাপা
পেল না সে প্রতিভার দামটা
অফিসের সোশ্যালে আমেচার নাটকে
রমা রায় অভিনয় করত
কাগজের রিপোর্টার মইদুল এসে রোজ কী লিখেছে তাই শুধু পড়ত
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথাও হারিয়ে গেলো সোনালি বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই
সেই সাতজন নেই আজ টেবিলটা তবু আছে
সাতটা পেয়ালা আজও খালি নেই
একই সে বাগানে আজ এসেছে নতুন কুঁড়ি
শুধু সেই সেদিনের মালি নেই
কত স্বপ্নের রোদ ওঠে এই কফি হাউজে
কত স্বপ্ন মেঘে ঢেকে যায়
কতজন এল গেল কতজনই আসবে
কফি হাউজটা শুধু থেকে যায়
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেলো সোনালি বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেলো সোনালি বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই