বাংলা কবিতা

  • বাবুমশাই
    - শঙ্খ ঘোষ
  • সে ছিল একদিন আমাদের যৌবনে কলকাতা!
    বেঁচে ছিলাম বলেই সবার কিনেছিলাম মাথা
    আর তাছাড়া ভাই
     
    আর তাছাড়া ভাই আমরা সবাই জেনেছিলাম হবে
    নতুন সমাজ, চোখের সামনে বিপ্লবে বিপ্লবে
    যাবে খোল-নলিচা
     
    যাবে খোল-নলিচা পালটে, বিচার করবে নিচু জনে
    কিন্তু সেদিন খুব কাছে নয় জানেন সেটা মনে
    মিত্র বাবুমশায় 
     
    মিত্র বাবুমশায় বিষয়-আশয় বাড়িয়ে যান তাই
    মাঝেমধ্যে ভাবেন তাদের নুন আনতে পান্তাই
    নিত্য ফুরোয় যাদের
     
    নিত্য ফুরোয় যাদের সাধ-আহ্লাদের শেষ তলানিটুকু
    চিরটা কাল রাখবে তাদের পায়ের তলার কুকুর
    সেটা হয় না বাবা
     
    সেটা হয় না বাবা বলেই থাবা বাড়ান যতেক বাবু
    কার ভাগে কী কম প’ড়ে যায় ভাবতে থাকেন ভাবুক
    অমনি দুচোখ বেয়ে
     
    অমনি দুচোখ বেয়ে অলপ্পেয়ে ঝরে জলের ধারা
    বলেন বাবু ‘হা, বিপ্লবের সব মাটি সাহারা’
    কুমীর কাঁদতে থাকে
     
    কুমীর কাঁদতে থাকে ‘আয় আমাকে নামা নামা বলে
    কিন্তু বাপু আর যাব না চরাতে-জঙ্গলে
    আমরা ঢের বুঝেছি
     
    আমরা ঢের বুঝেছি খেঁদীপেচী নামের এসব আদর
    সামনে গেলেই ভরবে মুখে, প্রাণ ভরে তাই সাধো
    তুমি সে-বন্ধু না
     
    তুমি সে-বন্ধু না, যে ধুপধুনা জ্বলে হাজার চোখে
    দেখতে পাবে তাকে, সে কি যেমন তেমন লোকে
    তাই সব অমাত্য
     
    তাই। সব অমাত্য পাত্রমিত্র এই বিলাপে খুশী
    শুঁড়িখানাই কেবল সত্য, আর তো সবই ভূষি
    ছি ছি হায় বেচারা
     
    ছি ছি হায় বেচারা? শুনুন যাঁরা মস্ত পরিত্রাতা
    এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা
    হেঁটে দেখতে শিখুন
     
    হেঁটে দেখতে শিখুন ঝরছে কী খুন দিনের রাতের মাথায়
    আরেকটা কলকাতায় সাহেব আরেকটা কলকাতায়
    সাহেব বাবুমশায়