নীলনদীতট থেকে সিন্ধু উপত্যকা,
সুমের, আক্কাড আর গাঢ়-পীত হোয়াংহোর তীরে,
বার বার নানা শতাব্দীর
আকাশ উঠেছে জ্ব'লে, ঝলসিতে যাদের উষ্ণীষে,
সেই সব সেনাদের
চিনি, আমি চিনি ;
- সূর্যসেনা তারা,
রাত্রির সাম্রাজ্যে আজও
সন্তর্পণে ফিরিছে ফেরারী।
মাঝরাতে একদিন
বিছানায় জেগে উঠে বসে,
সচকিত হয়ে তারা
শুনেছে কোথায় শিঙা বাজে,
সাজো সাজো, ডাকে কোন অলক্ষ্য আদেশ।
জনে জনে যুগে যুগে
বার হয়ে এসেছে উঠানে,
আগামী দিনের সূর্য দেখেছে আঁধারে
গুঁড়ো গুঁড়ো করে সারা আকাশে ছড়ানো।
সহসা জেনেছে তারা,
এইসব সূর্য-কণা তিল তিল ক'রে
বয়ে নিয়ে যেতে হবে কালের দিগন্তে,
রাত্রির শাসন-ভাঙা
ভয়ংকর চক্রান্তের গুপ্তচর-রূপে।
এক একটি সূর্য-কণা তুলে নিয়ে বুকে,
দুরাশার তুরঙ্গে সওয়ার
দুর্গম যুগান্ত-মরু পার হবে বলে,
তারা সব হয়েছে বাহির।
সুদূর সীমান্ত হায়
তারপর সরে গেছে প্রতি পায়ে পায়ে;
গাঢ় কুজ্ঝটিকা এসে
মুছে দিয়ে গেছে সব পথ;
ভয়ের তুফান-তোলা রাত্রির ভ্রূকুটি
হেনেছে হিংসার বজ্র।
দিগ্বিদিক-ভুলানো আঁধারে
কে কোথায় গিয়েছে হারিয়ে।
রাত্রির সাম্রাজ্য তাই এখনো অটুট !
ছড়ানো সূর্যের কণা
জড়ো করে যারা
জ্বালাবে নুতন দিন,
তারা আজও পলাতক,
দলছাড়ােঘুরে ফেরে দেশে আর কালে।
তবু সূর্য-কণা বুঝি হারাবার নয়,
থেকে থেকে জ্বলে ওঠে শাণিত বিদ্যুৎ
কত ম্লান শতাব্দীর প্রহর ধাঁধিয়ে
কোথা কোন লুকানো কৃপাণে,
ফেরারী সেনার।
এখনো ফেরারী কেন?
ফেরো সব পলাতক সেনা,
সাত সাগরের তীরে
ফৌজদার হেঁকে যায় শোনো।
আনো সব সূর্য-কণা
রাত্রি-মোছা চক্রান্তের প্রকাশ্য প্রান্তরে।
- এবার অজ্ঞাতবাস শেষ হল ফেরারী ফৌজের।