বাংলা কবিতা

  • ভাঁজ করা ফ্ল্যাট দুজনের
    - রমেন্দ্রকুমার আচার্য চৌধুরী
  • ভাঁজ করা একটাই ঘর; টান দিতে সাজন্ত বেরিয়ে আসে-
    বেডরুম। আর একটি টান দাও- গোপন খুপড়ি,
    ডানদিকে ; রঙিন টেলিভিশান, হৃদয় চাঞ্চল্যকারী কিছু
    স্বহস্তে অঙ্কিত ছবি, সুক্ষ চোখে দেখ ঘোড়াদের কেশের নানান ধাঁচা,
    টান দাও- ডাইনিং হলে স্পর্শকাতর কোনটি।
    ও হরিন। চারটে তাকে বই ঠাসা, আল মাহমুদের নাম ঝল্কে ওঠে
                                                                   এইবার ধীরে
    সেখানেই আমি আর চিত্রকর বন্ধু দিবা পাঁচ গতে,
    অন্ন আর পেয় নিয়ে চোখোচোখি বসি।
    আড়ে প্রায় দেড়হস্ত, দিঘে দিউ, নিচু এক লেখার টেবিলে,
    থরে থরে ষোলো পদ, ভোজ বিদ্যা কী ভাবে ধরায়,
    অমন সংক্ষেপে এত, ভগবান ! কে এ ভানুমতী।
    শেষ প্রস্থে ফলমূল, মিষ্টি, অস্ত যায় বেলা, জানলায় কার ঝিকিমিকি।
    (ঠারে হাসো কেন?) দীব্যমান যে দেবতা দূর স্বর্গলোক থেকে
                                                            সমস্ত দেখেন, তাঁকে
    সাক্ষী মানি- তিনিই বলুন, দুই গ্লাস পরিষ্কার জল কিনা।
    ঘরনী সে, না অতি ঘরন্তী। সাজো শাড়ি পরে
                                               বড়ি দিতে, কাসন বানাতে, দাও
    কে দেখেছে তাঁকে? এমন নারীকে নিয়ে অপূর্ব নির্মানক্ষমা,
    গৃহস্থালি নাকি করে! ডিম্বাননা নিপুনা মালিনী,
    সূত্রে মণিগনাইব শব্দে শব্দে গাঁথে নর, বহুমূল্য মাথার টায়রা।
    সুধা ধবলিম ঘর, সুধা গৃহ, পার হয়ে সরু,
    অন্ধকার দরদালান, অবশেষে পৌঁছে যাই সুখোষ্ণ আশ্রয়ে।
    আর আমি দিব্যচোখে দেখলাম মানুষ বৎসরে
    সুধা দিন আসে, দোর খুলে চমৎকৃত লোকে; মাটির নিচের কক্ষে
                                                               বন্দী দিন কই!
    গাছতলায়, পথে, হর্ষধ্বনি, যেখানে যে , লোকসবে,
    মাঠে, নদীতীরে, বলছে ; কতযুগে করায়ত্ত করলাম,
    মাধ্বী ধেনু; পিঠা আর সুধা।
    কথা শুনে বিস্মিত অনেক বন্ধু; একি! জেগেই ঘুমোও কবি-
    ক্ষনিকের এ-তুরীয়, এই উচ্চতর অনুভূতি, চেয়ে দেখ।