বাংলা কবিতা

  • অর্জুন কৃষ্ণচূড়ার কথা
    - মন্দাক্রান্তা সেন
  • অর্জুন গাছ একা ছিল ঐ মাঠে
    আর্যপুরুষ - আভিজাত্যের দম্ভ 
    নতজানু হল সব গাছ তার কাছে
    এইটুকু শুধু আরম্ভ কাহিনীর ।
                কোথা থেকে এল কৃষ্ণচূড়ার বীজ
                যুবতী হল সে কয়েকবছর পরে
                সাঁওতালি মেয়ে, খোঁপায় তীব্র লাল
                অর্জুন তাকে চাইল আপন ক'রে ।
    নতজানু হবে এমন মেয়ে সে নয়,
    বসন্তে সে তো একাই নিজেই সাজে,
    আর্যপুরুষে আসক্তি নেই তার
    ব্যস্ত আছে সে ফুল ফোটানোর কাজে ।
               খোঁপা থেকে খসে গতরাত্রের ফুল
               ঝিরঝিরে পাতা পোশাক বুনেছে তার
               অর্জুন, সে যে আর্যপুরুষ! ভাবে-
               সব সুন্দরে একা তার অধিকার ।
    অর্জুনগাছ চেয়ে দ্যাখে দূর থেকে
    কৃষ্ণচূড়ার হৃদয় ঝরছে রোজ,
    রূপ দেখে তার ধাঁধায় দু'খানি চোখ
    ভাবে, কবে পাবে ঐ হৃদয়ের খোঁজ।
              কাহিনী এবার শেষ করি তাড়াতাড়ি 
              কৃষ্ণচূড়ার জেদখানি বড় বেশি - 
              অভিমান সেও বিকাবে না কারও কাছে
              বরঞ্চ হবে বন্ধু, বা, প্রতিবেশী। 
    যদিও কাহিনী এমন সহজ নয়
    অর্জুন শুধু বাকল ঝরেছে, ঝরে 
    সাঁওতালি মেয়ে রক্ত ঝরাতে জানে - 
    আর্যপুরুষ হার মানে অন্তরে। 
             পরের জন্মে অর্জুনগাছ হয়ে 
             কৃষ্ণচূড়াকে বন্ধুর মতো দেখো - 
             আমাকে চিনতে ভুল কোরো  না হে ঋজু,
             রক্ত ঝরালে বাকল খসিয়ে ডেকো।