অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: মালগাড়ির গতি বেশি ছিল। কন্ট্রোলরুমে সে কথা জানিয়েছিলেন এক গেটম্যান। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ফোনে সতর্ক করার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা জানালেন কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। তিনি আরও জানান, কেন মালগাড়ির গতি বেশি ছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুরেন্দ্র কুমার। সেখানেই তিনি জানান, পেপার সিগন্যাল বা ছাড়পত্র পাওয়ার পর মালগাড়ির গতি থাকার কথা সর্বোচ্চ ১০-১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রওনা দেওয়ার পর মালগাড়ির গতি ছিল অনেকটাই বেশি। এক গেটম্যান তা কন্ট্রোলরুমকে জানায়। মালগাড়ি চালককে ফোন করে জানানোর আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। কিন্তু কেন অতিরিক্ত গতিতে চলছিল মালগাড়ি, তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ইতিমধ্যে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে গিয়েছে।
মঙ্গলবার সাতসকালে মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। রেলের তরফে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ৫ টা বেজে ৫০ মিনিট থেকে রাঙাপানি ও আলুয়াবাড়ির মাঝের অটোমেটিক সিগন্যাল বন্ধ ছিল। ফলে সকাল থেকেই ট্রেন চলাচল হচ্ছিল অত্যন্ত ধীর গতিতে। পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিটের মাধ্যমে চলাচল করছিল ট্রেন। সকাল ৮ টা বেজে ২৭ মিনিট নাগাদ পেপার মেমো অর্থাৎ কাগুজে ছাড়পত্র পেয়েই রাঙাপানি স্টেশন ছেড়ে এগোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। জানা গিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে TA912 ফর্ম দিয়েছিলেন রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার। যার ভিত্তিতে সিগন্যাল না থাকলেও নির্দিষ্ট গতিতে ট্রেন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন চালক।
৮ টা বেজে ৪২ মিনিট নাগাদ রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ে মালগাড়িটি। এতেই মাথাচাড়া দিচ্ছে একাধিক প্রশ্ন। দুটি ট্রেনের মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল ১৫ মিনিট। পেপার মেমোয় যদি কোনও ট্রেন চালানো হয়, সেক্ষেত্রে নিয়মই হচ্ছে গতি প্রতি ঘণ্টায় হবে ১০ কিমি। এতেই প্রশ্ন তবে কীভাবে পনেরো মিনিট ব্যবধানে চলা দুটি ট্রেন এত কাছে এল? তবে কি কাগুজে ছাড়পত্রের নিয়ম মানেননি চালক?