নয়া ফৌজদারি আইন নিয়ে সংসদে পুনরায় আলোচনা হোক, মোদীকে চিঠি দিয়ে আবেদন মমতার
এই সময় | ২১ জুন ২০২৪
আর দিন দশেক বাকি। ১ জুলাই থেকেই দেশে কার্যকরী হবে নয়া ফৌজদারি আইন। গত বছর ডিসেম্বর মাসে নয়া অপরাধ আইন পাশ করানো হয় লোকসভায়। আইন কার্যকরী করতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনও মেলে। তবে, নয়া অপরাধ আইন গোটা দেশে কার্যকরী করার তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হোক এবং তিনটি আইন নিয়ে নবনির্বাচিত সংসদে পুনরায় আলোচনা করা হোক - প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই মর্মে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।চিঠিতে মমতা উল্লেখ করেছেন, 'আমি মনে করি সংশোধিত এই আইনগুলি নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। এগুলিকে নবনির্বাচিত সংসদে পুনরায় উপস্থাপন করা হোক।' সংসদে এই নতুন সংশোধিত ফৌজদারি আইন পর্যালোচনা করার জন্য এটিকে গোটা দেশে কার্যকরী করার নির্ধারিত সময় পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গত বছর ডিসেম্বর মাসে পার্লামেন্টের দুই কক্ষ থেকে মোট ১৪৬ জন সাংসদকে অপসারিত করে দেওয়া হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে ‘একতরফা’ ভাবে সংসদে কোনও আলোচনা না করেই এই তিনটি বিল পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু, সেই তিনটি বিল পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। মমতা বলেন, ‘লোকসভার নবনির্বাচিত সদস্যরা যদি এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলি নিয়ে চিন্তাভাবনা করে এবং একটি ঐক্যমতে পৌঁছয় তবে এটি আরও ভাল হবে। আপনাকে অনুরোধ করছি তিনটি আইন প্রয়োগের বিষয়টি স্থগিত রাখার এবং নতুন করে পর্যালোচনা করার জন্য।’
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আগামী ১ জুলাই থেকেই ভারতে কার্যকর হবে দণ্ডবিধি সংক্রান্ত তিনটি নতুন আইন। ফলে ভারতীয় আইন ব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি হওয়া দণ্ডবিধিগুলি।
সেক্ষেত্রে, ১৮৬০ সালে তৈরি হওয়া ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হয়েছে নতুন ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ আইন দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হয় ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’-এর বদলে আসতে চলেছে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’।
যদিও, ডিসেম্বর মাসেই কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও তাড়াহুড়ো করে এই বিল পাশের বিরোধিতা করেছিল। লোকসভার চিত্রটা পাল্টেছে সদ্য সমাপ্ত হওয়া নির্বাচনে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। সরকার গড়তে হয়েছে জোট সঙ্গী দলগুলির সমর্থনের উপর ভিত্তি করে। সংসদে বিরোধী দলগুলির সাংসদের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। সেই কারণে, কার্যত একপেশে ভাবে এই আইন পাশ করিয়ে নেওয়ার বিরোধিতার মাত্রা বাড়াতে তৎপর ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূল কংগ্রেস বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলে।