বেআইনি অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় কাজ নিয়ে বচসা, সামশেরগঞ্জে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী
প্রতিদিন | ২২ জুন ২০২৪
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: অ্যালুমিনিয়াম কারখানার কাজ শুরু করাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার মহব্বতপুর। চলল বোমাবাজি, গুলি (Shootout)। কয়েক রাউন্ড গুলিতে আহত হন নুর ইসলাম শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী। তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলের ঘটনায় বোমায় জখম হয়েছেন সেলিম শেখ নামে আরও এক যুবক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জের (Samserganj) মহব্বতপুর গ্রামে গত কয়েক বছর আগে একটি অ্যালুমিনিয়াম (Alumimium) গলানোর কারখানা গড়ে ওঠে। গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, কারখানার মালিক গাজিরুউদ্দিন শেখ বেআইনিভাবে বিভিন্ন রাসায়নিক এনে কারখানায় অ্যালুমিনিয়াম গলানোর কাজ করতেন। বেআইনিভাবে (Illegal)চলা অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হত। তার ফলে গ্রামবাসীরা অসুস্থ হয়ে পড়তেন। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে সম্প্রতি কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়।
গ্রামবাসীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে কারখানার মালিক গাজিরুউদ্দিন শেখ কয়েকজন কর্মীকে দিয়ে নিজের কারখানার ভিতরে একটি ছোট জলাধার তৈরির কাজ করছিলেন। অভিযোগ, সেসময় জনা কয়েক গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের (TMC) একটি গোষ্ঠী গিয়ে সেই কাজে বাধা দেয়। কারখানাটি চালানোর জন্য তৃণমূলের এক জেলা পরিষদ সদস্য গাজিরুউদ্দিন শেখকে সাহায্য করছেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর অভিযোগ, কারখানাটির সমস্ত বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামের সমর্থকরা গায়ের জোরে কারখানাটি বন্ধ করে দিতে চাইছেন। যদিও তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA)এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। এনিয়ে গন্ডগোলের জেরে আজকের ঘটনা।
আহত নুর ইসলামের ছেলে শাহিদ আফ্রিদি বলেন, “আজ কারখানার ভিতর কাজ শুরু হলে গ্রামবাসীরা বাধা দিতে পারেন, এই অনুমান করে কারখানার মালিক এবং তাঁর অনুগামীরা সেখানে আগে থেকে বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করে রেখেছিল। ঘটনার সময় আমার বাবা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই কারখানা থেকে ছোড়া একটি গুলি আমার বাবার পেটে এসে লাগে।”
এদিন বিকেলে জলাধার তৈরিকে কেন্দ্র করে বিবাদ চরমে উঠলে হঠাৎই দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়। মুহুর্মুহু বোমা পড়তে থাকে গোটা এলাকায়। পরে সামশেরগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকাতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার (SP) আনন্দ রায় জানান, “এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র।”