• হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ দলের ব্লক সভাপতির
    আজকাল | ২৩ জুন ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: লোকসভা নির্বাচন মিটতেই ফের একবার মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য চলে এল। ভরতপুর-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান সুমন অভিযোগ করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবারের লোকসভা নির্বাচনে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের হয়ে ভোট না করে কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীর হয়ে গোপনে ভোট করেছিলেন। হুমায়ুনের বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত দাবি করে তাঁর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দাবি করেছেন মুস্তাফিজুর।

    তৃণমূল ব্লক সভাপতি বলেন, 'লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে হুমায়ুন কবীর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের জয়ের কৃতিত্ব তিনি একাই নিতে চাইছেন। কিন্তু হুমায়ুন কবীর নিজে তাঁর বিধানসভায় এলাকার ২৬২ টি বুথের একটিতেও সক্রিয়ভাবে ইউসুফ পাঠানের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করেননি। তার ফলে ইউসুফ পাঠানের জয়ের মার্জিন যা হওয়ার কথা ছিল তার থেকে অনেক কম হয়েছে।'

    মুস্তাফিজুর অভিযোগ করেন, 'এবারের লোকসভা নির্বাচনের সময় ইদের উৎসব থাকায় সংখ্যালঘু মানুষদের জন্য যে কাপড় বরাদ্দ করা হয়েছিল বিধায়ক সেই কাপড় কংগ্রেস সমর্থকদেরকে দিয়েছিলেন। এমনকী ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ত্রিপলও তিনি কংগ্রেসের লোকজনকেই দিয়েছেন।'

    হুমায়ুনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করে তৃণমূল ব্লক সভাপতি বলেন, 'আমাদের দলের বিধায়ক শক্তিপুরে যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তার জন্য সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছিল। আমাদের ধারনা এই কথা অধীর চৌধুরী, হুমায়ুনকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। অধীরবাবু ভেবেছিলেন এর ফলে ভোট কাটাকাটির সুবিধা তিনি পাবেন। কিন্তু হুমায়ুন কবীর ওই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য না করলে ইউসুফ পাঠান আরও বেশি ভোট পেতেন।'

    হুমায়ুনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বলেন, 'লোকসভা ভোটের দিন ভরতপুরের বিভিন্ন প্রান্তে দলের কর্মীরা আক্রান্ত হলেও হুমায়ুন কবীর কোনও খোঁজখবর নেননি। ইউসুফ পাঠানের জয়ের পর উনি সমস্ত কৃতিত্ব নিজে নিতে চাইছেন। আসলে উনি তৃণমূল প্রার্থীকে হারানোর জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছেন। হুমায়ুন কবীর এখন মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনীতিতে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছেন। তাই সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে টিকে থাকতে চাইছেন। ওনার নিজেরই বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত। উনি যেভাবে দলের সাংগঠনিক চেয়ারম্যান এবং সভাপতিকে ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছেন তাতে সমস্ত স্তরের নেতৃত্বকেও উনি কালিমালিপ্ত করছেন।'

    দলের ব্লক সভাপতির মন্তব্য প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবীর বলেন, 'এই ধরনের লোকেদেরকে আমি রাজনীতিতে পাগল-ছাগল বলে মনে করি। তাঁদের কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আমি মনে করি না। রাজ্যের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব জানেন মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন কবীরের কী গ্রহণযোগ্যতা আছে। তাই নির্বাচনী প্রচারে মুর্শিদাবাদে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আমাকে দারাজ সার্টিফিকেট দিয়ে গিয়েছিলেন।'

    হুমায়ুন বলেন, 'আগামী দিন আমি ভরতপুরে সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মসূচি করব এবং সেই কর্মসূচিতে যদি কোনও ব্লক সভাপতি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে সেই ব্লক সভাপতি এবং তাদেঁর সাঙ্গপাঙ্গদেরকে বহরমপুরে রাস্তার উপর ধরে পেটাব।'
  • Link to this news (আজকাল)