• আয়ুর্বেদের ৩ প্রাচীন প্রতিষ্ঠানের নাম কেন কলকাতা মেট্রোয় নেই? প্রশ্ন চিকিৎসকদের
    এই সময় | ৩০ জুন ২০২৪
  • দিল্লিতে হতে পারলে কলকাতা মেট্রোয় নয় কেন? যাঁরা নিত্যযাত্রী নন, মেট্রোয় ট্রেন থেকে নামার পরেই তাঁদের চোখ যায় স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডে। দিকনির্দেশ অনুযায়ী তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, কোন গেট দিয়ে বেরোলে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনো যাবে। তাতে রাস্তা পারাপারের যেমন ঝক্কি থাকে না, তেমনই আবার সময় বাঁচে। সে জন্য স্টেশন সংলগ্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অফিস, ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান অথবা হাসপাতালের নাম ডিসপ্লে বোর্ডে সাধারণত উল্লেখ করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।সে ক্ষেত্রে কলকাতার তিনটি শতাব্দী প্রাচীন আয়ুর্বেদিক কলেজের নাম কেন সেই সব প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি মেট্রো স্টেশনগুলোর ডিসপ্লে বোর্ডে উল্লেখ থাকবে না-- তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বাংলার এক আয়ুর্বেদিক চিকিৎক। ওই চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘দিল্লি মেট্রো এই সে দিন হলো। সেখানকার ডিসপ্লে বোর্ডে আয়ুর্বেদিক কলেজের নাম দেওয়া থাকলে কলকাতাতেই গড়ে ওঠা এশিয়ার প্রথম আয়ুর্বেদিক কলেজের নাম কেন কলকাতা মেট্রোয় থাকবে না?’

    এমনই তিনটি আয়ুর্বেদিক কলেজের নাম উল্লেখ করে রেল বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তাঁর আবেদনে সাড়াও দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিষয়টি যে একেবারে ফেলনার নয়, তা আঁচ করে ওই চিকিৎসক সুমিত সুরকে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে— ‘আপনার আবেদন ও পরামর্শ আমরা গ্রহণ করছি।’

    শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের কাছে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে রয়েছে ১৯১৬ সালে তৈরি জেবি রায় স্টেট আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। যা এশিয়ার প্রথম আয়ুর্বেদিক কলেজ হিসেবে পরিচিত। অথচ শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের কোনও এগজ়িট গেটে কোনও ডিসপ্লে বোর্ডে তার উল্লেখ নেই। আবার মহাত্মা গান্ধী রোড মেট্রো স্টেশন থেকে একটা অটোরিকশা ধরে চলে যাওয়া যায় রাজাবাজারে, যার কাছে ১০৬ বছরের বেশি পুরোনো ‘ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট আয়ুর্বেদিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’।

    আবার শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনের কাছেই রয়েছে ‘বিশ্বনাথ আয়ুর্বেদ মহা বিদ্যালয় অ্যান্ড হসপিটাল’। সেটাও ১০৫ বছরের বেশি পুরোনো। এমজি রোড বা শোভাবাজার, কোনও মেট্রো স্টেশনেই ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ নেই ডিসপ্লে বোর্ডে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, একটা সময়ে উত্তর কলকাতায় ওই কলেজগুলির মাধ্যমে রাস্তা চিনতেন পথচলতি বহু মানুষ।

    কয়েকশো বছর আগে ওই এলাকায় কবিরাজদের নামে এলাকা চিহ্নিত হতো। কিন্তু সে সব এখন স্মৃতির সরণিতে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসক সুমিত সুরের আবেদন গ্রহণ করার পর কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাডমিনিসট্রেটিভ রিফর্মস অ্যান্ড পাবলিক গ্রিভ্যান্স-এর তরফে তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

    এ বিষয়ে সুমিত বলেন, ‘এশিয়ায় ওই তিনটি কলেজের গুরুত্ব অনেক। তিনটি শুধু ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান নয়, ইতিহাসের দলিল-ও। দিল্লি মেট্রোর মোহন এস্টেট স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডে নাম রয়েছে ২০১৭ সালে তৈরি হওয়া অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ আয়ুর্বেদ-এর। বাংলায় কেন এমন পদক্ষেপ করা হবে না?’

    এই ব্যাপারে কলকাতা মেট্রো রেলের সিপিআরও কৌশিক মিত্র বলেন, ‘ওই নামগুলো নথিভুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেটা আমাদের কাছে আবেদন করা হলে বিবেচনা করে দেখা হবে।’
  • Link to this news (এই সময়)