ধীমান রায়, কাটোয়া: সপ্তাহান্তের ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। তবে ফেরা হল না। রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল বাড়ির অদূরেই। শরীরের রয়েছে একাধিক কোপের আঘাত। পরিবারের অভিযোগ, কুপিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার চন্দ্রপুর গ্রামে। মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। আজ রবিবার দেহটির ময়নাতদন্ত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম প্রবীর মণ্ডল (৫২)। তিনি মন্তেশ্বর থানার পাকুড়মুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে ওই গ্রামেরই নিধন বাগ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে পূর্ব রাগবশত এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ধৃতকে আদালতে পেশ করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির চুঁচুড়ায় (Chinsurah) একটি ভোজ্য তেল কারখানায় তিনি কাজ করতেন। সেখানেই থাকতেন। প্রতি শনিবার ডিউটি সেরে বাড়িতে ফিরতেন। শনিবার রাতে মেমারি (Memari) স্টেশনে নামার পর বাস ধরে তিনি চন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ডে নামেন। তার পর হেঁটে বাড়িতে ফিরছিলেন।
অভিযোগ, রাত প্রায় ন’টা নাগাদ প্রবীরবাবুকে রাস্তায় ঘিরে ধরে কয়েকজন। তার পরেই এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। স্থানীয়রা রাস্তায় তাঁর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর যায় পুলিশে। দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে জানান।
এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী চুমকি মণ্ডল নিধন বাগ, তাঁর ভাই উৎপল বাগ এবং নিধনের সম্বন্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। চুমকিদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রবীরবাবু ও তাঁর বিয়ের আগে নিধনের স্ত্রী বন্দনা বাগের সম্পর্ক ছিল প্রবীরবাবুর। যদিও চুমকিদেবীর দাবি, তাঁদের বিয়ের পর সেই সম্পর্কে ইতি পড়ে।
আরও জানা গিয়েছে, নিধন বাগেরও (৪৫) দুটি বিয়ে। প্রথম স্ত্রী আত্মঘাতী হওয়ার পর বন্দনাদেবীকে বিয়ে করেন। বন্দনাদেবী বছর দেড়েক আগে আত্মহত্যা করেন। নিধনের সন্দেহ প্রবীর মণ্ডলের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জেরেই তাঁর স্ত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন।
বন্দনাদেবীর মৃত্যুর পর নিধন প্রবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। জামিনে ছাড়া পান তিনি। অভিযোগ, জামিনের পর থেকে নিধন তাঁকে খুনের হুমকি দিত। সেই আক্রোশেই নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি জানিয়েছেন,ওই খুনের ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।