আবাসে বাড়তে পারে বরাদ্দ, ভোটব্যাঙ্কে ফাটল বুজবে কি?
এই সময় | ০৪ জুলাই ২০২৪
এই সময়: ধাক্কা সব থেকে বেশি এসেছে গ্রামীণ এলাকা থেকেই। তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে তাই গ্রামেই ফোকাস করেছেন নরেন্দ্র মোদী। সপ্তাহ দেড়েক আগে বারাণসীতে কেন্দ্রের নতুন কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে পাশে নিয়ে কিষানসভা করেছেন নমো। বুধবার আবার সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামীণ আবাস প্রকল্পে রাজ্যগুলির ভর্তুকির অঙ্ক গত বছরের তুলনায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার বা আনুমানিক ৫৫ হাজার কোটি টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের।এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গ্রামীন আবাস প্রকল্পে সব থেকে বেশি বার্ষিক বরাদ্দ হতে চলেছে। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের একাধিক রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় লোকসভা ভোটে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। কেন এমন হলো, তার পর্যালোচনাও চলছে পদ্মে। কিন্তু ফল বিশ্লেষণের অপেক্ষায় বসে না থেকে কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত গ্রামীণ এলাকার ভোটারদের মন ছোঁয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চাইছে।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষেই হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। এই রাজ্যগুলির নির্বাচনের ফলাফলের উপর অনেকাংশেই নির্ভর করছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। গ্রামীণ এলাকার ভোট নিজেদের ঝুলিতে টানাই মোদী-শাহদের কাছে এই মুহূর্তে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই তাই গ্রামীণ আবাস প্রকল্পে কেন্দ্র জোর দিতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
সূত্রের খবর, এ বারের লোকসভা ভোটে গ্রামীণ এলাকায় বিজেপির ধাক্কা খাওয়াই শুধু নয়, সামগ্রিকভাবে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিও যথেষ্ট চিন্তায় রেখেছে কেন্দ্রকে। ফলে দ্রুত গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে না পারলে চলতি বছরের শেষ দিকে তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে যে বড়সড় খেসারত চোকাতে হবে, সেটাও বিলক্ষণ জানেন মোদীরা।
সূত্রের খবর, গত আট বছরে দেশের ২.৬ কোটি দরিদ্র পরিবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীন আবাস) প্রকল্পের আওতায় এসেছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় অতিরিক্ত ২ কোটি বাড়ি তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। যদিও মোদী সরকারের এই পরিকল্পনাকে বিজেপির নতুন ‘জুমলাবাজি’ বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
দলের মুখপাত্র শান্তনু সেনের কথায়, ‘আবাস যোজনা প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য বকেয়া টাকা এখনও মেটায়নি মোদী সরকার। সেটা আগে মেটাক। তারপর ওদের পরবর্তী পরিকল্পনার কথা শুনব।’ যদিও বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যর কথায়, ‘গ্রাম, শহরের মধ্যে কোনও বিভেদরেখা নয়, সব কা সাথ, সব কা প্রয়াস, সব কা বিকাশ—এই নীতিতে চলছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধীর সব কিছুর মধ্যেই ভোট অঙ্ক খোঁজে।’
কারখানায় কাজের সীমিত সুযোগ থাকায় দেশের যুবকদের একটা বড় অংশ কৃষির সঙ্গে যুক্ত। তাদের কাজের সুযোগ করে দিতে বিভিন্ন প্রকল্প, গ্রামাঞ্চলের রাস্তা তৈরি সমেত গ্রামীণ পরিকাঠামো খাতে খরচ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আবাসে ভর্তুকি বৃদ্ধি তারই অংশ বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।