ঘরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অগ্নিদগ্ধ বাবা-মা-ছেলের চিৎকারে পাশের ঘর থেকে ছুটে আসে বড় ছেলে। চিৎকার চেঁচামেচিতে ছুটে আসে পাড়া প্রতিবেশীরাও। বাড়িতেই আগুনে পুড়ে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এবার সামনে এল পারিবারিক দ্বন্দ্ব। নিহত শেখ তুতার ছেলে ওয়াসিম আখতার অভিযোগ করেছেন, তাঁর কাকিমা স্মৃতি বিবি ওরফে নাজরিন নিহারের বিরুদ্ধে। ওয়াসিম আখতার জানিয়েছেন, তাঁর কাকিমার সঙ্গে গ্রামের বাসিন্দা চন্দন শেখ নামে এক ব্যক্তির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। চন্দন শেখ পেশায় হাতুড়ে চিকিৎসক। তাঁর বাবা, মা সেটা জানতে পারায় তার প্রতিবাদ করে। সেই কারণেই চক্রান্ত করে তাঁর বাবা, মা ও ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন শেখ তুতোর ভাগ্নে শেখ মুস্তাফা ও নিহত রূপা বিবির ভাই শেখ আব্দুল্লাহও। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।
বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বাম চাঁদাইপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় ভর্তি ছিলেন শেখ তুতো। শনিবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বোলপুর থানার রায়পুর সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন গীত গ্রামে বাসিন্দা ছিলেন শেখ তুতো। বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর একতলা বাড়িতে জানলা খুলে রেখেই ছোটো ছেলে আয়ান শেখ (৪) ও স্ত্রী রূপা বিবি (৩০)-কে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। সেইসময় জানলা দিয়ে ঘরের ভিতর কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
তাঁদের আর্ত চিৎকারে ছুটে আসেন পাশের রুমে শুয়ে থাকা তাঁদের বড় ছেলে শেখ রাজ। তাঁর চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন গ্রামের লোকজন। কিন্তু ততক্ষণে তিনজন-ই আগুনে ঝলসে যায়। শরীরে ৮০ ভাগের বেশি ঝলসে যাওয়া, গুরুতর জখম ৩ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তারপর সেখান থেকে তাদের বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু বর্ধমান আনার পথেই প্রথমে ছোটো ছেলে আয়ানের মৃত্যু হয়। ঠিক তারপরই মা রূপা বিবিরও মৃত্যু হয়।