• উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের ট্রেনের মিডল বার্থ খুলে গুরুতর জখম প্রৌঢ় যাত্রী
    এই সময় | ০৮ জুলাই ২০২৪
  • এই সময়: কেরালার পর এবার বাংলা। চলন্ত উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের মিডল বার্থ হঠাৎ খুলে পড়ে যাওয়ায় গুরুতর জখম হলেন এক যাত্রী। রবিবার ভোরে আচমকাই সিট আটকানোর চেন ছিঁড়ে ওই যাত্রীর মাথায় পড়ে মিডল বার্থের একাংশ।রেল সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের থার্ড এসি কামরায় উঠেছিলেন দিনহাটার বাসিন্দা বছর সত্তরের যাত্রী বিমলেন্দু রায় এবং তাঁর স্ত্রী। বি-থ্রি কামরায় ৪১ ও ৪২ নম্বর সিটে ছিলেন তাঁরা। দু’টি সিটই ছিল লোয়ার বার্থে। এ দিন ভোরে শিয়ালদহগামী উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস যখন গন্তব্য থেকে কিছুটা দূরে, তখনই হঠাৎ মিডল বার্থটি খুলে পড়ে।

    লোয়ার বার্থে তখন শুয়ে থাকার জন্য অল্পের জন্য গোটা আসনটি বিমলেন্দুর মাথায় এসে পড়েনি। কিন্তু মিডল বার্থের আসনটিকে যে দু’টি চেন শক্ত করে ধরে রাখে, তার একটি মাথায় লাগে বিমলেন্দুর। ওই চেনের মাথায় ছিল লোহার একটি এল প্যাটার্নের ধাতব বস্তু। তার আঘাতেই মাথা ফেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোতে শুরু করে। সহযাত্রীরাই প্রথমে রেলের দেওয়া চাদর ক্ষতস্থানে আটকে তাঁর দেখভাল করতে থাকেন। মুহূর্তের মধ্যে গোটা চাদরটি রক্তে ভিজে যায়।

    খবর পেয়ে কিছুক্ষণ বাদে টিকিট পরীক্ষক এসে পৌঁছন। বিমলেন্দু প্রাথমিক চিকিৎসার আবেদন করলেও রেল কর্তৃপক্ষ তখন কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি বলে অভিযোগ। টিকিট পরীক্ষক ১৩৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে বললেও সেই সময়ে হেল্পলাইন বেজে গিয়েছে বলেও দাবি বিমলেন্দু ও সহযাত্রীদের। শেষে টিকিট পরীক্ষকই শিয়ালদহে রেল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। ট্রেন শিয়ালদহে ঢোকার কিছুক্ষণ বাদে বিমলেন্দুকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

    সপ্তাহ কয়েক আগে প্রায় একই ঘটনা ঘটেছিল কেরালার ওয়ারাঙ্গালের কাছে। সেখানে আলি খান নামে বছর বাষট্টির এক প্রৌঢ় উঠেছিলেন এর্নাকুলম-হজরত নিজ়ামুদ্দিন মিলেনিয়াম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে। কেরালা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে আচমকাই ওই যাত্রীর ঘাড়ে ভেঙে পড়ে ট্রেনের মিডল বার্থ। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।

    বিমলেন্দুর কথায়, ‘আমার ভাগ্য ভালো যে, এই ঘটনা শিয়ালদহ ঢোকার কিছুক্ষণ আগে হয়েছে। নইলে তো রক্তক্ষরণ হয়ে আমি মরেও যেতে পারতাম।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘ট্রেনে এমন বিপদ ঘটলে প্রাথমিক চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই কেন? শিয়ালদহে রেলের নিজস্ব হাসপাতাল থাকতেও কেন আমাকে এনআরএসে নিয়ে যাওয়া হলো, আমি বুঝলাম না।’

    বিমলেন্দু জানান, এনআরএসে তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন এবং ক্ষতস্থানে একটু ব্যান্ডেজ করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের বক্তব্য, ‘যাত্রীর আহত হওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তবে মিডল বার্থ খুলে তাতে চেন লাগানোর সময়ে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করার জন্যেই এমন হয়েছে। বাঙ্কটি ঠিক ভাবে আটকানো ছিল না বলেই আপাতত মনে হচ্ছে।’

    রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিয়ালদহ স্টেশনে মোতায়েন রেলের অ্যাম্বুল্যান্স করেই ওই যাত্রীকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রেনের এক টিকিট পরীক্ষক নিজে সঙ্গে গিয়েছিলেন।
  • Link to this news (এই সময়)