নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জাল সরকারি নোটিসের ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়াচ্ছে আমজনতার একটা বড় অংশ। ভুয়ো ডিজিটাল অ্যারেস্টের নথিতে ব্যবহার করা হচ্ছে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক ও এজেন্সির লোগো। সাইবার জালিয়াতদের এই কৌশল আটকাতে একগুচ্ছ গাইডলাইন তৈরি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রাজ্যগুলিকে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রক সূত্রে খবর। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতার উপর জোর দিয়েছে দিল্লি।
সাইবার অপরাধীরা পুলিস, সিবিআই, ইডি ও শুল্কদপ্তরের অফিসারের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনকে ইমেলে ভুয়ো নোটিস পাঠাচ্ছে। সঙ্গে থাকছে নকল এফআইআর। তাতে উল্লেখ করা থাকছে বিভিন্ন ধারা। নোটিসে বলা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে একাধিক সিম রয়েছে। আবার কখন লেখা হচ্ছে মাদক বা জাল পাসপোর্ট ধরা পড়েছে। তাতে নাম জড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির। নোটিসে সাড়া না দিলে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখাচ্ছে সাইবার প্রতারকরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নজরে এসেছে, বিগত ছয় মাসে পশ্চিমবঙ্গ সহ সমস্ত রাজ্যে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা বেড়েছে হু হু করে। এই কৌশলে প্রচুর টাকা হাতিয়েছে জালিয়াতরা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন দিল্লিও। বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নাম করে ই-মেল আসায় ঘাবড়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাঁরা এগুলিকে আসল বলে ধরে নিয়ে কথা চালাচ্ছেন অপরাধীদের সঙ্গে। সাইবার অপরাধীরা ভিডিও কলে পোশাক পরে হাজির হওয়ায় আমজনতা ধরে নিচ্ছে, তারা পুলিস বা এজেন্সির কোনও বড় কর্তা। এই ধরনের কল নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বিশেষত সরকারি নোটিসের জাল কপি অপরাধীরা ব্যবহার করায় চিন্তা বেড়েছে কর্তাদের।
সাইবার অপরাধীদের এই কৌশল ভোঁতা করে দিতে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও উঠে পড়ে লেগেছে। সমস্ত রাজ্যের পুলিসকে বলা হয়েছে, এই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ এলে তার তদন্ত আলাদাভাবে করতে হবে। সিবিআই, ইডি বা কোন রাজ্যের পুলিসের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে সেটি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে এই ধরনের জালিয়াতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ডিটিটাল প্ল্যাটফর্মে আসার জন্য প্রতারকদের ব্যবহার করা সিমগুলির তালিকা তৈরি করে ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমকে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি। যাতে সংশ্লিষ্ট সিমগুলির সূত্র ধরে প্রতারকদের খোলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মেলে। পাশাপাশি যাদের নামে সিমগুলি তোলা হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সতর্কবার্তা, সরকারি কোনও মেল এলে তাতে ‘ডট গভ ইন’ লেখা থাকবে। জালিয়াতদের মেলে ‘ডট কম’ বা ‘ওআরজি’ থাকছে।