নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: স্টক রয়েছে। তবুও ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ধর্মঘটের খবর প্রকাশ্যে আসার পর শহর, শহরতলির বিভিন্ন বাজারে এক রাতেই বেড়ে গেল মুরগির দাম। কোনও বাজারে কেজিতে ১০ তো কোথাও ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই ছবিই চোখে পড়েছে। তবে কোনও কোনও বাজারে দাম বাড়ার ছবি চোখে পড়েনি। সেই জায়গাগুলিতে পুরনো দামেই বিক্রি হয়েছে মুরগির মাংস।
খোলা বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, আগে কেনা মুরগি মজুত রয়েছে। আগামী কয়েক দিন তা চলবে। কিন্তু অভিযোগ, আগের দামে কেনা মুরগির দাম আচমকা বাড়িয়ে দিয়ে অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনও খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিন গড়িয়া এলাকার বিভিন্ন মুরগির মাংসের দোকানগুলিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, দাম একদিন আগের তুলনায় কোথাও ১০, কোথাও ২০ টাকা কেজি দরে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বুধবারও মুরগির কিলো (কাটা) বিক্রি হয়েছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। বৃহস্পতিবার তা ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। শ্যামল দেবনাথ নামে এক দোকানদার বলেন, ‘গোটা মুরগি ১৫০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করছি। বৃহস্পতিবার গাড়ি আসেনি। আগামী কয়েক দিন গাড়ি আসবে না শুনছি। কিন্তু আগামী দু-তিনদিনের মতো স্টক মজুত আছে। তাই মুরগির অভাব হবে না। তবে ধর্মঘটের জেরে মুরগির জোগান যদি অনিয়মিত হয় তাহলে দাম বেড়ে যাবে আরও।’ নাকতলার এক বাজারে ২৭০ টাকা কিলো দরেও বৃহস্পতিবার মুরগি বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। হাতিবাগান বাজারে ২৬০ টাকা কেজি দরে মুরগির (কাটা) মাংস বিক্রি হয়েছে। একদিন আগেও সে দাম ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কিলো। সমীর ঘটক নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘স্টক যা আছে তাতে আগামী তিন-চারদিন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে বৃহস্পতিবার গাড়ি এসেছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত জোগান দিতে পারেনি। শুক্রবার থেকে গাড়ি আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে স্টক কমতে শুরু করলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল।’ উল্টোডাঙা এবং মানিকতলা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দাম না বাড়লেও আগামী এক-দু’দিনের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে যাবে। মুচিবাজারে মুরগির মাংস কিনতে আসা ঋতুপর্ণা রাহা নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘সব্জির দাম তো বিশেষ কিছু কমছে না। মুরগিও শেষ কবে ১৫০ বা ১৭০ টাকায় কিনেছি ভুলে গিয়েছি। কেজিতে ২০০-২২০ টাকার কমে তো দাম নামছেই না। আবার ধর্মঘট হলে তো ২৫০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কী খাবে বলুন তো?’