কালনা রাজবাড়ির সংরক্ষিত এলাকায় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীর ওপর হামলার ঘটনায় এবার পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে শো-কজ করল তৃণমূল। শুক্রবারই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের আধিকারিক। তার ওপরে দলের শো-কজে পুরপ্রধান আনন্দ দত্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পড়তে থাকুন - মাগুর মাছ চাষ করতে তৈরি করেছিলেন সুড়ঙ্গ, নতুন তত্ত্ব খাড়া করল সাদ্দাম সরদার
গত ১৬ জুলাই উলটো রথ উপলক্ষে কালনা রাজবাড়ির ভিতরে ভোগ বিতরণ চলছিল। সেখানে পানীয় জলের ব্যারেল নিয়ে একটি টোটো ঢোকার চেষ্টা করলে নিরাপত্তারক্ষীকা তাকে আটকান। কালনা রাজবাড়ির সংরক্ষিত এলাকায় যে কোনও রকম মোটর বা ইঞ্জিনচালিত যান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। টোটোটিকে আটকাতেই ছুটে আসেন কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত। নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে টোটোটিকে সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকিয়ে দেন তিনি। সঙ্গে অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে থাকেন তিনি। এমনকী কালনা রাজবাড়ির ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সিনিয়র কনজ়ারভেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট অমিত মালোর দফতরে ঢুকে হুমকি দেন তিনি। অমিতবাবু জানিয়েছেন, পুরপ্রধানের কাজকর্মের পুরোটাই ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়েছিল। সেকথা জানতে পেরে পুরপ্রধানের শাগরেদরা এসে ফোন থেকে সেই ভিডিয়োগুলি ডিলিট করান। তবে ২টি ভিডিয়ো তারা ডিলিট করতে পারেনি। সেগুলিই পরে ভাইরাল হয়ে যায়।
ভাইরাল ওই ভিডিয়োর প্রেক্ষিতে কলকাতায় সংস্থার সদর দফতরে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। শুক্রবার পুলিশেও অভিযোগ জমা পড়েছে।
এর পরই আনন্দ দত্তকে শো-কজ করে তৃণমূল। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কেন একজন কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীর ওপর তিনি বল প্রয়োগ করলেন তা জানতে চাওয়া হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে পদক্ষেপ করা হতে পারে। ঘটনার পর আনন্দ দত্তের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। দলের অন্দরে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন তিনি।
বলে রাখি, ২০২২ সালে পুরভোটের পর কালনা পুরসভায় বোর্ড গঠন নিয়ে তুমুল গোলমাল বাঁধে তৃণমূলের আন্দরে। যার জেরে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। পরে কলকাতা থেকে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব আনন্দ দত্তকে পুরপ্রধান হিসাবে ঘোষণা করে। যার জেরে বিদ্রোহে সাময়িক ইতি পড়ে।