সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার ঝালদা থানার তুলিন এলাকায় খেলার মাঠের দখল ঘিরে রবিবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, তৃণমূলের এক নেতা দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে জোর করে জমি দখলের চেষ্টা করে। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি, আন্দোলনকারীদের মারধরও করা হয়। দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কিও শুরু হয়। পুলিস তিনি আন্দোলনকারীকে আটক করলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। আন্দোলনকারীরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরে যাদের আটক করা হয়েছিল, তাদের পুলিস ছেড়ে দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। মাঠে পুলিস পিকেট বসানো হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা।
ঝালদা-১ ব্লকের তুলিন গ্রাম পঞ্চায়েতের তুলিন গ্রামে ঢোকার মুখে রয়েছে ইউনাইটেড ফুটবল গ্রাউন্ড। ওই মাঠ একাধিকবার দখলের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ। মাঠ বাঁচাতে এলাকার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দল এবং গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে লড়াই করেন। রবিবার বাইরের বেশ কয়েকজন লোকজন নিয়ে মাঠে আসেন ঝালদা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সহ সভাপতি শেখ সুলেমান। সঙ্গে ছিল জেসিবি। তা দিয়ে ওই মাঠে কাজ শুরু করতেই স্থানীয় বাসিন্দারা কাজে বাধা দেন। মাঠ কোনওমতেই দখল হতে দেওয়া যাবে না বলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও সেই বিক্ষোভে শামিল হন। তখন বিক্ষোভকারীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের তরফে স্থানীয় বাসিন্দা জগেশ্বর মাহাত বলেন, শতাধিক বছরের পুরনো এই ফুটবল মাঠ। এলাকার ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে স্থানীয় তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার স্কুলের পড়ুয়াদের সব ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এখানে হয়। ওই মাঠ সরকারি খাস জায়গায় রয়েছে। শেখ সুলেমান বেআইনিভাবে ওই মাঠের কোনও অংশ নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে। তারপর থেকে ওই মাঠ দখল করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
তিনি বলেন, এদিন ওই তৃণমূল নেতা আচমকা জেসিবি নিয়ে মাঠে হাজির হয়। মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা তার প্রতিবাদ করে। তারপরই সুলেমানের সঙ্গে আসা দুষ্কৃতীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মারধর শুরু করে। এমনকী আগ্নেয়াস্ত্র বের করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। পুলিস সুলেমানের হয়ে আমাকে সহ কয়েকজনকে আটক করে। তার প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেন। তার জেরে পুলিস আমাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ফুটবল মাঠ আমরা দখল হতে দেব না। জীবন দিয়েও রক্ষা করব।
এবিষয়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ সুলেমান বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই জমি আমি কিনেছি। আমার নামে জমির রেকর্ড রয়েছে। জগেশ্বর মাহাত সহ কয়েকজন বেআইনিভাবে কাজে বাধা দিচ্ছে। বারবার দুষ্কৃতী নিয়ে এসে ঝামেলা পাকাচ্ছে। এদিনও লাঠি নিয়ে মারধর করে। পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আইনের উপর আমার আস্থা রয়েছে। আইনি পথে ওই জমি দখল নিতে পারব। পুরুলিয়ার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।