ট্রেন দুর্ঘটনায় জখম বাংলার একাধিক জেলার যাত্রী, উৎকণ্ঠায় পরিবারের সদস্যরা
এই সময় | ৩১ জুলাই ২০২৪
সাতসকালে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে হাওড়া-মুম্বাই এক্সপ্রেস। ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে লাইনচ্যুত হয় অন্তত ১৮ টি বগি। মৃতের সংখ্যা আপাতত দুই। দুর্ঘটনায় প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকেই এই রাজ্যের বাসিন্দা বলে খবর। একের পর এক আহত হওয়ার আসতেই দুশ্চিন্তায় পরিবারের সদস্যরা।হাওড়া-মুম্বাই এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় মালদার ইংরেজবাজারের নরহাট্টা অঞ্চলের লক্ষ্মীঘাট এলাকার তিন বাসিন্দা আহত হয়েছেন। জামশেদ আলী, সহরাব হোসেন ও কাদের শেখ নামে তিন শ্রমিকের ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত খবর এসে পৌঁছয় বাড়িতে। তারপর থেকেই চিন্তায় রয়েছে পরিবারের লোকজন।
ট্রেন দুর্ঘটনাই আহতদের তালিকায় রয়েছেন চাঁচলের এক পরিযায়ী শ্রমিক। মালদার চাঁচল ১ নং ব্লকের দেবিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা রাজু সেখ (৪০)। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কোমরে গুরুতর আঘাত রয়েছে রাজুর। স্থানীয় রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। ব্যাপক উৎকণ্ঠায় রয়েছে পরিবার। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক রাজু শেখ রবিবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মুম্বাই যাওয়ার উদ্দেশে। পরিবার রয়েছে তিন কন্যা, স্ত্রী এবং বৃদ্ধ বাবা-মা। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য তিনি। চিকিৎসার জন্য সরকারি সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন পরিবারের লোকেরা।
অন্যদিকে, ১২৮১০ হাওড়া মুম্বাই ট্রেন দুর্ঘটনার সময় ট্রেনে ছিলেন নদিয়ার রানাঘাটের গাংনাপুরের বাসিন্দা উৎপল সরকার। ক্যান্সার আক্রান্ত ৬৪ বছর বয়সী মায়ের চিকিৎসার জন্য মাকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন উৎপল সরকার। পেশায় ইলেকট্রিক গাড়ি চালক উৎপল সরকার। দুর্ঘটনার জেরে উৎপল বাবুর বৃদ্ধা মা জখম হন।
আতঙ্কিত উৎপল সরকার জানান, সোমবার সন্ধ্যায় হাওড়া স্টেশন থেকে বৃদ্ধ মাকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খণ্ডের চন্দ্রধরপুরের কাছে লাইনচ্যুত হয় ট্রেনের ১৮ টি বগি। ভোররাতে সকলেই ঘুমিয়ে থাকার কারণে সেভাবে কিছু অনুভব করতে না পারলেও বগিটি তীব্র ঝাঁকুনি দিয়ে পাল্টি হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘সিট থেকে ছিটকে পড়ে গিয়ে মুখমন্ডলে আঘাত পেয়ে জখম আমার বৃদ্ধা মা। সামান্য আঘাত আমারও লাগে। এরপর বাইরে বেরিয়ে এসে রেলের ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর বিশেষ ট্রেনে করে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হই।’ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে এনডিআরএফ সহ আরপিএস ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। তবে একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে রেল পরিষেবা তুলতে শুরু করেছেন যাত্রীরা।