শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ২০০ টাকা চুরির অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে। বচসার জেরে শাবলের মারে মৃত্যু হল যুবকের বাবার। কাঠগড়ায় এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার বিকেলে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিম আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির লছিপুর এলাকায়। সন্ধেয় গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে পরিবারের তরফে ৫ যুবকের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
মৃত ব্যক্তির নাম কৃষ্ণ গোস্বামী (৪৮)। কুলটির নিয়ামতপুর ফাঁড়ির লছিপুর এলাকার বাসিন্দা। ওই ব্যক্তির ছোট ছেলে এক দোকানে থেকে ২০০ টাকা চুরি করেছে, এই অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, কৃষ্ণর ছোট ছেলেকে খুঁজছিল এলাকার বাসিন্দা জনৈক রায়না, বুলু, সুভাষ, বৃন্দা ও উত্তম। বিকেলের দিকে তাঁকে হাতের নাগালে পেয়ে মারধর শুরু করে। এই গন্ডগোলের সময় কৃষ্ণ গোস্বামীর স্ত্রী, অন্য ছেলেরা এবং প্রতিবেশীরা সেখানে পৌঁছয়।
অভিযোগ, তখন ওই যুবকরা কৃষ্ণর ছোট ছেলেকে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাদের হাতে শাবল, লোহার রড ছিল। নিজের ছোট ছেলেকে বাঁচাতে, যুবকদের বাধা দেন কৃষ্ণ। তখন শাবল দিয়ে তাঁকে মারধর করে তারা। শাবলের মারে কৃষ্ণ রাস্তায় পড়ে অচৈতন্য হয়ে পড়ে যান। তা দেখে অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালায়। ছেলেরা রক্তাক্ত, অচৈতন্য কৃষ্ণা গোস্বামীকে বিকেল পাঁচটা নাগাদ আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কৃষ্ণার স্ত্রী মুন্নিদেবী-সহ অন্যান্যরা নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে চলে আসেন অভিযোগ জানাতে।
কৃষ্ণার স্ত্রী মুন্নিদেবী ও মেজ ছেলে গোবিন্দ গোস্বামী অভিযোগ করে বলেন, “বুলু ও সুভাষরা টাকা চুরির মিথ্যে কথা বলছে। ছোট ছেলে যখন দোকানে গিয়েছিল, তখন তাঁকে ওরা ধরেছিল। পরে বিকেলে আবার আসে। সেই সময় ওরা আমাদের উপর শাবল, লোহার রড নিয়ে চড়াও হয়। কৃষ্ণকে শাবল দিয়ে মারে। তাতে তাঁর মৃত্যু হয়।” এই ঘটনা যার দোকানের সামনে ঘটেছে অর্থাৎ অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী সন্ধ্যা বাউরি বলেন, “বুলু, সুভাষরা বলছিল কৃষ্ণ গোস্বামীর ছোট ছেলে ২২০ টাকা চুরি করেছে। আমি বারবার বলছিলাম ঐ ছেলে টাকা চুরি করতে পারে না। কিন্তু ওরা আমার কোনও কথা শোনেনি। ওই ছেলেটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন কৃষ্ণ বাধা দেয়। তখন তাঁকে শাবল দিয়ে মারা হয়। তাতে সে পড়ে যায়।”
কুলটির এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “একটা গন্ডগোল হয়েছিল নিয়ামতপুর এলাকায়। তাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের তরফে তাঁকে শাবল দিয়ে মারা হয়েছে বলে কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”