দক্ষিণেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার বিহারের ২ দুষ্কৃতী, ধৃতরা ‘গোল্ডেন ডাকু’ সুবোধ ‘ঘনিষ্ঠ’?
প্রতিদিন | ০৩ আগস্ট ২০২৪
অর্ণব দাস, বারাকপুর: বেলঘরিয়া থানায় বিহারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার সুবোধ সিং পুলিশ হেফাজতে। তারই মাঝে বিহারের আরও দুই দুষ্কৃতীকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার করল পুলিশ। দক্ষিণেশ্বরের একটি গেস্ট হাউস থেকে তাদের গ্রেপ্তার করল পুলিশ। আর এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ধৃত দুই দুষ্কৃতী সুমন কুমার (১৯) এবং অমিত কুমার (২১) সঙ্গে সুবোধের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা। একটি সূত্র আবার বলছে, মোট পাঁচজন দুষ্কৃতী বিহারের বৈশালী থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণেশ্বরের পূর্ণশ্রী গেস্ট হাউসে এসে উঠেছিল। শুক্রবার তারা বারাকপুরের কোনও ব্যবসায়ীকে হামলার ছক কষেছিল। কিন্তু তার আগেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই গেস্ট হাউসে বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশ হানা দেয়। সুমন ও অমিতকে গ্রেপ্তার করে।
যদিও পুলিশ জানিয়েছে, গেস্ট হাউসে দুজনই উপস্থিত ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের গেস্ট হাউস ছাড়ার কথা ছিল। এবিষয়ে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং জানিয়েছেন, “ধৃতদের থেকে দুটি ইম্প্রোভাইজড আগ্নেয়াস্ত্র এবং আট রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। কি উদ্দেশ্যে তারা বিহার থেকে এসেছিল তা জানতে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা চলছে।” এদিনই দুজনকে বারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক ৫ দিনের বারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিকে, ৬দিনের পুলিশ হেফাজত শেষে এদিনই সুবোধ সিংকে তোলা হয়েছিল বারাকপুর আদালতে। তার আগে প্রতিবারের মতো এদিনও কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল আদালত চত্বর। আগের দিনের মতো এদিনও হেলমেট পরিয়েই কুখ্যাত বেউর জেল বন্ধিকে পেশ করা হয়েছিল আদালতে। তদন্তকারী অফিসার ধৃত সুবোধের কন্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহের আবেদন জানান। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। সুবোধের আইনজীবী কমলজিৎ সিং এই প্রসঙ্গে বলেন, “এসিজিএম এজলাস বয়কটের কারণে আমরা মুভ করিনি। তদন্তকারী অফিসার ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের মামলায় আদালতে ভয়েস স্যাম্পেলের জন্য আবেদন করেন। আগামী ৬তারিখ সেই কেসে সুবোধ সিংয়ের কন্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ততদিন সে জেল হেফাজতে থাকবে। একইসঙ্গে জেল হেফাজতে থাকা রোশন যাদবেরও কন্ঠস্বর নমুনা সেদিনই সংগ্রহ করা হবে।”
প্রসঙ্গত, বারাকপুরের রেস্তরাঁ ব্যবসায়ী তাপস ভগতকে হুমকি ফোনের অভিযোগে গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের সাগরেদ রোশন যাদবকে বিহারের বেউর জেল থেকে নিয়ে আসে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন সে হুমকি ফোনের অভিযোগ স্বীকারও করেছিল। পরে সিআইডি তাকে হেফাজতে নেয়। বর্তমানে সে জেল হেফাজতে রয়েছে। বেলঘরিয়া রথতলায় বারাকপুরের ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে শুটআউটের ঘটনার পর তাকেও ফোনে হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনাতেই এবার বেউর জেলবন্দি দুজনের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি দক্ষিণেশ্বর থেকে ধৃত বিহারের দুই দুষ্কৃতীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে সুবোধের সঙ্গে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।