শান্তিনিকেতনে প্রথমবার উপস্থাপিত হল কবিগুরুর নৃত্যনাট্য ‘পরিশোধ’
বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, বোলপুর: ১৯৩৬ সালে রচনার পর শান্তিনিকেতনের ইতিহাসে প্রথমবার মঞ্চে উপস্থাপিত হল রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘পরিশোধ’। শনিবার শান্তিনিকেতনের লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে নৃত্যনাট্যটি পরিবেশিত হয়। শান্তিনিকেতন সুন্দর কালচারাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সমগ্র অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। রবীন্দ্র ঐতিহ্য ও ভাবধারার পাশাপাশি নতুনত্বের ছোঁয়ায়, শিল্পীদের অভিনয় উপস্থিত দর্শকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। নির্দেশনায় ছিলেন বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের অধ্যাপক অমর্ত্য মুখোপাধ্যায়। সংস্কৃতির পীঠস্থান বিশ্বভারতী-শান্তিনিকেতনে বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে মূলত পরিবেশিত হয় চিত্রাঙ্গদা, চণ্ডালিকা, শ্যামা, কখনও কখনও শাপমোচন বা তাসের দেশ। ফলে, গতানুগতিক ভাবধারার ফলে দর্শকরা কিছুটা হলেও একঘেয়েমির শিকার হচ্ছিলেন। তাই পরিশোধের মতো নৃত্যনাট্য প্রথমবার উপস্থাপিত হওয়ায় তা দেখতে এদিন লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, বর্তমান পড়ুয়া সহ স্থানীয় ও আশ্রমিকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৯৩৬ সালে পরিশোধ নৃত্যনাট্যটি লেখেন রবীন্দ্রনাথ। তাই এর আদি পাঠ ও স্বরলিপির অনুসরণে, রচনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বজায় রেখে উপস্থাপনা মোটেই সহজ ছিল না। তাই হয়তো অন্যান্য নৃত্যনাট্য ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অনুষ্ঠিত হলেও কোনও নির্দেশক বা পরিচালক এযাবৎ পরিশোধ উপস্থাপন করতে পারেননি। সেই অর্থে বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল নির্দেশক তথা শিল্পীদের কাছে। তার জন্য দীর্ঘদিন ধরে মহড়া হওয়ার পর ২২ শ্রাবণ, কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসের প্রাক্কালে শনিবার শান্তিনিকেতনের লিপিকায় এটি উপস্থাপিত হয়। নৃত্যনাট্যটির অভিনয়ে ছিলেন সঙ্গীত ভবনের পড়ুয়ারা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পরিশোধ, ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যের পূর্বরূপ হলেও গঠন, কাহিনি, চরিত্র সবই ছিল ভিন্ন। পরিশোধের অভিনয় দর্শকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। তা দেখতে শনিবার সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন প্রবীন আশ্রমিক, অধ্যাপক এবং প্রাক্তনীরা। তাঁদের কাছেও নৃত্যনাট্যটি প্রশংসিত হয়েছে। এ বিষয়ে নির্দেশক অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় বলেন, পরিশোধ উপস্থাপনার জন্য প্রয়োজন ছিল সঠিক গবেষণা, পরিকল্পনা, অর্থ ও রবীন্দ্র-দর্শনের উপলব্ধি। শুধুই প্রয়োগ-কৌশল নয়, বোধেরও বিশেষ প্রয়োজন। সেদিক থেকে এই ব্যতিক্রমী প্রয়াস সার্থক হয়েছে। এটি উপস্থাপনা করে আমরা সকলেই তৃপ্ত। নিজস্ব চিত্র