• সিউড়ির যুবকের আবিষ্কার 'ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার'
    এই সময় | ০৫ আগস্ট ২০২৪
  • সিউড়ির যুবকের আবিষ্কার 'ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার', যেখানে শুধু চলতি বছর নয়, দেখা যাবে যে কোনও বছরের দিন এবং তারিখ। অর্থাৎ এই ক্যালেন্ডার বাড়িতে থাকলে, আর নতুন কোনও ক্যালেন্ডারের প্রয়োজন হবে না। ইতিমধ্যেই সেই ক্যালেন্ডার পেটেন্ট হয়ে গিয়েছে। ব্যাপক কার্যকরী এই ক্যালেন্ডার আবিষ্কার করলেন সিউড়ির যুবক আত্রেয় ঘোষাল।ছোট থেকেই গণিতে ভালো আত্রেয়। আর এই গণিতে ভালো হওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বেশকিছু পুরষ্কারও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সিউড়ির একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে পড়াশোনার পর বর্তমানে জয়পুরের মণিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি পড়ছেন তিনি। মূলত স্কলারশিপের উপরেই ভর করে চলছে তাঁর পড়াশোনা। প্রথম বর্ষের পড়াকালীন কলেজ থেকে একটি প্রজেক্ট বানাতে বলা হয় সমস্ত ছাত্রকে। তখনই গণিতে তুখোড় এই ছাত্রের মাথায় আসে 'ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার' তৈরির ভাবনা। সেই মতো পড়াশোনাও শুরু করেন তিনি। সঙ্গে চলত থাকে প্রয়োজনায় অংক কষা। লাগাতার ৭ দিনের চেষ্টার অবশেষ আশে সাফল্য, তৈরি হয় 'ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার'। আত্রেয়র তৈরি ক্যালেন্ডারে দেখা যায়, বিভিন্ন বছরের দিনক্ষণ।

    কিন্ত হঠাৎই এমন পরিকল্পনা কেন? উত্তরে আত্রেয়র বলেন, 'প্রতিবছর ক্যালেন্ডার তৈরির জন্য প্রায়ই ১ বিলিয়ন কাগজ ভারতে ব্যবহার হয়। বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করার পাশাপাশি কাগজ তৈরির অন্যতম উপাদান হল কাঠ। তাই প্রতিবছর কাগজ তৈরির জন্য লক্ষ লক্ষ গাছও কেটে ফেলা হয়। কিন্তু এই ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার বাজারে এলে গাছ কাটার পরিমাণ অনেকটাই কমবে। পরিবেশের ভরসাম্যও রক্ষা পাবে।'

    আত্রেয় আরও বলেন, 'মোট ১৪ ধরনের ক্যালেন্ডার ব্যবহার হয়, যার মধ্যে ৭টি থাকে লিপ ইয়ারের জন্য, আর সাতটি নন লিপ ইয়ারের জন্য। বছরের পর বছর কীভাবে সেই ১৪টি ক্যালেন্ডারের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, প্রথমে সেটাকে আয়ত্তে আনি। তারপর বেশ কিছু গবেষণা এবং অংক কষে অবশেষে তৈরি হয় ছোট্ট এই ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার। তারপর এই ক্যালেন্ডারটিকে পেটেন্ট করতে সাহায্য করেন আমার কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং এইচওডি কল্পনা শর্মা। তাই এটির আবিষ্কর্তা হিসেবে আমার পাশাপাশি নাম রয়েছে কল্পনা শর্মারও।'

    এছাড়াও এই কাজে আত্রেয়কে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য ও সেটির রূপদান করেছেন তাঁর দাদা অরিত্র ঘোষাল। আপাতত এই ক্যালেন্ডার কার্ডবোর্ড কেটে তৈরি করা হয়েছে। তবে পরবর্তীকালে আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্লাস্টিক বা অন্য কোনও উপাদান দিয়ে এটি তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে আত্রেয়র।

    এদিকে ছেলের এই কৃতিত্বে খুশি মা শ্যামলী ঘোষালও। তিনি বলেন, 'ছোট থেকেই ছেলের অংকের প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ। এই ধরনের খেয়াল যে এই প্রথম তা নয়, ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন জিনিস নিয়ে ওর গবেষণা চলেই এসেছে। তবে এই প্রথম ওর কাজ স্বীকৃতি পাওয়ায় আমি খুব খুশি। আশা করি আগামী দিনে ও আরও নতুন কিছু আবিষ্কার করবে।'
  • Link to this news (এই সময়)