• বাংলাদেশের অশান্তির প্রভাব এপারের মাছ বাজারে, চিন্তা পদ্মার ইলিশ নিয়েও
    এই সময় | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • বাংলাদেশের অশান্তিতে প্রভাব পড়বে এপারের হেঁশেলেও? মাছে-ভাতে বাঙালি পুজোয় পদ্মার ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকবে? উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের সরাসরি প্রভাব পড়েছে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারে। সীমান্তে ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কারণে দু'দেশের মাছ ব্যবসায়ীরা কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন তো হচ্ছেনই। পাশাপাশি, এবারের পুজোয় পদ্মার ইলিশ আমদানি হবে কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।হাওড়ার মাছ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৮ থেকে ১০টি ট্রাকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন পাবদা, পারশে, ভেটকি, ট্যাংরা, পমফ্রেট এবং অন্যান্য মাছ আমদানি হয়। আবার ভারত থেকে ১০ থেকে ১২ টি ট্রাকে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন বোয়াল, রুই, কাতলা, ভেটকি, কাজরি এবং অন্যান্য মাছ বাংলাদেশে রপ্তানি হয়। ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি টাকা করে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতি কী ভাবে তাঁরা সামাল দেবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না।

    এদিকে ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার ইলিশ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ফলে এপার বাংলায় পদ্মার ইলিশ আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পূর্বতন ভারত সরকার বারবার ইলিশ রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশকে অনুরোধ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিন্তু বছর ছয়েক আগে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পর বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপুজোর আগে ইলিশ রপ্তানিতে অনুমতি দেয়। এটাকে তারা ‘পুজোর উপহার’ বলতেন। গত বছরেও সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। যদিও হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রায় ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করেছিলেন। কিন্তু এবারে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পদ্মার ইলিশ কি আদৌ আসবে? ধন্দে ব্যবসায়ীরা।

    ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানিয়েছেন, এ বছর পুজোর সময় পদ্মার ইলিশের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি লেখার কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক গন্ডগোলের কারণে কী হবে বোঝা যাচ্ছে না।বাংলাদেশের অশান্তির প্রভাব এপারের মাছ বাজারে, চিন্তা পদ্মার ইলিশ নিয়েওনতুন সরকার এলে তাদের কাছে একই আবেদন করা হবে। তারা যদি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয় তবেই বাঙালির পাতে দেখা যেতে পারে ওপার বাংলার রুপোলি ইলিশ।

    প্রায় এক মাস আগে বাংলাদেশের ছাত্রদের চাকরিতে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে। সেই সময় দু'দেশের সীমান্তে ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে বাংলাদেশ থেকে মাছ ভর্তি ট্রাক হাওড়া মাছ বাজারে আসতে পারেনি। আবার একইভাবে ভারত থেকেও মাছের ট্রাক ও দেশে যেতে পারেনি। ফলে দু'দেশের ব্যবসায়ীরাই যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। দিন দশেক আগে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ফের দু'দেশের মধ্যে মাছের আমদানি ও রপ্তানি শুরু হয়। কিন্তু শেষ চারদিনে ফের দেশ জুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ায় দু’দেশের মধ্যে ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সীমান্তে দাঁড়িয়ে পড়ে সারি সারি ট্রাক। মঙ্গলবার হাওড়া মাছ বাজারে বাংলাদেশ থেকে মাছ ভর্তি ট্রাক ঢোকার কথা থাকলেও একটাও ট্রাক আসেনি।
  • Link to this news (এই সময়)