• শহরে কোথায় কত ইঞ্চির পাইপ, ক’টা ভালভ?  জলের লাইনের ডিজিটাল মানচিত্র তৈরির উদ্যোগ
    বর্তমান | ১৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ইতিমধ্যেই শহরে ওয়ার্ড ভিত্তিক ভূ-গর্ভস্থ নিকাশি নালার মানচিত্র বানিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এবার শহরের পানীয় জলের পাইপ লাইনেরও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল মানচিত্র তৈরির কাজও শুরু হল। ইতিমধ্যেই বেহালায় ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সেই কাজ চলছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। কোন ওয়ার্ডে, কোন রাস্তার তলায় কত ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ রয়েছে। কোথায় ক’টি ভালভ আছে। ক’টি পাম্পিং স্টেশন। কোথায় কোথায় পাইপলাইনগুলি সংযুক্ত হয়েছে। রাস্তার ধারে কতগুলি কল আছে। এ সবই মানচিত্রে নথিভুক্ত হবে। আগামী দিনে এই মানচিত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি হবে পানীয় জলসংক্রান্ত উন্নয়নের রূপরেখা।

    কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই কাজের তদারকির দায়িত্ব দিয়েছেন পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিংকে। সোমবার পুরসভার অধিবেশন কক্ষে এই সংক্রান্ত বৈঠক করেন তারক সিং। সেখানে জল সরবরাহ বিভাগের শীর্ষকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় ১০০ ইঞ্জিনিয়ারকে ডাকা হয়েছিল। কীভাবে কাজ করতে হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এদিন। এই প্রসঙ্গে পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, আমাদের মূলত দু’ধরনের পাইপলাইন রয়েছে। একটি ছয় ইঞ্চি এবং অন্যটি চার ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ। কোন রাস্তার নীচ দিয়ে কত ইঞ্চির পাইপ সরবরাহ হয়েছে, তার একটি পুরনো ম্যাপ রয়েছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেটির তথ্যের একাধিকবার সংযোজন-বিয়োজন হয়। সেই পরিবর্তনের কোনও পুনঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য পুরসভার হাতে নেই। তাই মোটামুটি একটি ‘ফুলপ্রুফ’ মানচিত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ড ধরে ধরে কাজ হবে। কত আয়তনের রাস্তায় কত ইঞ্চির পাইপ থাকে, তার একটা মাপ রয়েছে। ফলে প্রতিটি রাস্তা মেপে বুঝে নেওয়া হবে তার তলায় কত ইঞ্চির জলের পাইপলাইন রয়েছে। ভালভগুলি পরীক্ষা করা হবে। সেই রাস্তার ধারে ক’টা কল রয়েছে, ওখানে ক’টি বাড়িতে জলের সংযোগ চালু আছে, কতগুলি বস্তিতে কত সংখ্যক কল আছে, সেখানে কোনও বুস্টার পাম্পিং স্টেশন রয়েছে কিংবা কোন বুস্টার থেকে সেখানে জল সরবরাহ করা হয়, সবটাই নথিভুক্ত করা হবে। সেই ডিজিটাল মানচিত্রের উপর ভিত্তি করেই আগামী দিনে উন্নয়নের পরিকল্পনা করা যাবে। পাশাপাশি ঠিক হয়েছে, বিভিন্ন নিম্নবিত্ত এলাকায় একাধিক ঘরের জন্য একটি বা দু’টি কলের বদলে ঘরে ঘরে জলের লাইন দেওয়া হবে। রাস্তার ধারে কিংবা এলাকার মধ্যে চাতাল করে তৈরি হওয়া কলগুলি তুলে দেবে পুরসভা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাস্তার ধারে থাকা কলগুলি থেকে জল বেশি অপচয় হয়। এলাকার বাসিন্দারা কলের ট্যাপ বা মুখ ভেঙে ফেলেন। বার বার তা মেরামত করতে হয়। এমন অঞ্চলে ঘরে ঘরে জলের লাইন করে দেওয়া হলে নিজের বাড়িতে থাকা কলের মুখ তখন কেউ আর ভাঙবেন না। অপচয় খানিকটা হলেও কমবে। তারক সিং বলেন, ‘নিকাশির ক্ষেত্রে ডিজিটাল ম্যাপ রয়েছে। সেটিকে কম্পিউটার স্ক্রিনে এক ক্লিকেই দেখে নেওয়া যায়। সেভাবেই জলের ক্ষেত্রেও এমন একটি ডিজিটাল ম্যাপ বানানো হচ্ছে। আগামী দিনে তার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতের উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করা যাবে। যদি কোথাও মনে হয় যে কোথাও চার ইঞ্চির বদলে ছয় ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ বসাতে হবে কিংবা কোথাও নতুন বুস্টার তৈরি হলে সেখানে জলের চাপ বাড়ানো যাবে, সে সবই এই ম্যাপের নিরিখে করা যাবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)