বিধান নস্কর, সল্টলেক: ফের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছলেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সের পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। শনিবার সকাল দশটা নাগাদ ক্যাবে করে পৌঁছন সিবিআই দপ্তরে। এদিনও সিজিও কমপ্লেক্সের পিছনের গেট দিয়ে কড়া নিরাপত্তায় ভিতরে ঢোকেন। সেই সময় সাংবাদিকদের কাছে তাঁর অনুরোধ, “দয়া করে বলবেন না, আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার সময় তিনি আরও বলেন, “আমাকে সিবিআই তদন্তের স্বার্থে ডেকেছে। আমি তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। দয়া করে বলবেন না আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ মাঝরাস্তা থেকে তাঁকে পাকড়াও করে সিবিআই। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সূত্রের খবর, রাত দেড়টা পর্যন্ত ম্যারাথন জেরা করা হয় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। এর পর গভীর রাতে সিজিও কমপ্লেক্সের পিছনের দরজা দিয়ে তিনি বেরিয়ে যান বলেই খবর। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ ফের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন সন্দীপ। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ফের পিছনের দরজা দিয়ে সিবিআই দপ্তরে দ্বিতীয়বার ঢোকেন তিনি। সাধারণত যে পথ দিয়ে সকলে সিবিআই দপ্তরে ঢোকা বেরনো করেন, সেই পথে কেন যাতায়াত করছেন না সন্দীপ ঘোষ, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চাপানউতোর তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল তরুণী চিকিৎসকের। সেই সময় আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। ঘটনার পর থেকে তৎকালীন অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। চাপের মুখে অবশেষে গত ১২ আগস্ট ঘটনার ‘নৈতিক দায়িত্ব’ কাঁধে নিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন সন্দীপ ঘোষ। ইস্তফার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে পুনর্বাসন দেওয়া হয় তাঁকে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে বহাল করা হয়। তবে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশমতো ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। ইতিমধ্যে সিবিআই আর জি কর কাণ্ডের তদন্তভার নেয়।
অভিশপ্ত রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, সে সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের আশায় সিবিআই তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে তলবও করে। তবে হাজিরা দেননি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। অথচ শুক্রবার পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সন্দীপ। ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’র বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টে আরও একটি মামলাও করেন। আদালতে সন্দীপের যুক্তি, সংবাদমাধ্যম তাঁর বিরুদ্ধে একতরফা প্রচার করা হচ্ছে। ভুল খবর রটানো হচ্ছে। আর এর জন্য তাঁর সম্মানহানি হচ্ছে, জীবনেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।