নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ‘দু’টাকা থেকে ১৫০ টাকা, ৭২০ রকমের রাখি রাখা। আসুন আসুন, ফ্রিতে দেখা।’-বহরমপুরের প্রাঙ্গণ মার্কেটে রবিবার এক রাখি বিক্রেতা সমানতালে হেঁকে চলেছিলেন। নানাধরনের রাখিতে তাঁদের দোকান ভর্তি। সেখান থেকে রাখি কিনতে অনেক ক্রেতাই ভিড় জমাচ্ছেন। সোমবার রাখি পূর্ণিমা। তার আগে রবিবার সকাল থেকেই বাজার জমে উঠল। রাখির দোকানের পাশাপাশি উপহারসামগ্রী, জামাকাপড়, মিষ্টি ও মাংস কিনতেও বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন।
এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন সব্জি বাজারে অতিরিক্ত ভিড় ছিল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোরী ও যুবতীদের রাখি কিনতে দেখা যায়। বিভিন্ন রঙের পাথর দিয়ে তৈরি ব্রেসলেট রাখির চাহিদাই বেশি ছিল। কারণ এধরনের রাখি দাদা বা ভাইরা বেশ কিছুদিন হাতে পরে থাকতে পারেন। তাই দাম বেশি হলেও এই রঙিন পাথর ও কাঁচ বসানো রাখি কেনার প্রতি মেয়েদের ঝোঁক দেখা যায়। বহরমপুরের বাসিন্দা অর্পিতা ভৌমিক বলেন, প্রতিবারই নতুন ডিজাইনের রাখি দাদা ও ভাইদের পড়ানোর ইচ্ছা থাকে। এবার স্টোন বসানো সুন্দর রাখি পেয়েছি। আমাদের ভাইফোঁটা দেওয়ার রীতি নেই। তাই রাখিবন্ধনই জাঁকজমকের সঙ্গে উদযাপন করি। আজ প্রথমে রাখি কেনার পর উপহার, চকোলেট ও মিষ্টি কিনলাম। লালবাগের বাসিন্দা রণিতা রায় বলেন, আমার আবার রেডিমেড রাখির তুলনায় ফুলের রাখি বেশি পছন্দ। তাই এদিন রাখিপূর্ণিমার জন্য বাজার করে রাখছি। সোমবার সকালে ফুলের রাখি তৈরি করে নিয়ে যাব।
প্রাঙ্গণ মার্কেটের রাখি বিক্রেতা জয়ন্ত বড়াল বলেন, আমার দোকানে ৭২০ রকমের বিভিন্ন ডিজাইনের রাখি রয়েছে। সবচেয়ে কম দু’টাকা দামের রাখি যেমন বিক্রি হচ্ছে, তেমনি ১৫০ টাকা দামের রাখিও অনেকে কিনেছেন। ঠাকুর-দেবতার ছবি দেওয়া রাখি এবং মোদি রাখির চাহিদাও ভালো রয়েছে।
কান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক রাখি বিক্রেতা নিত্যানন্দ দাস বলেন, প্লাস্টিকের পুঁতির রাখি এবার ভালো বিক্রি হচ্ছে। এই রাখির দাম ১০-২০ টাকার মধ্যে রয়েছে। লাল, হলুদ, সাদা, বাসন্তী ও বেগুনি রঙের কাপড়ের রাখির চাহিদাও ভালো রয়েছে।
রেডিমেড রাখির পাশাপাশি ফুলের রাখির চাহিদা ভালোই আছে। বহরমপুরের পুলিস লাইনের উল্টোদিকে জাতীয় সড়কের পাশে বসেন এক ফুল বিক্রেতা। তিনি বলেন, রবিবার সকাল থেকেই আমরা ফুলের রাখি তৈরি শুরু করে দিয়েছি। কারণ সোমবার সকালে প্রচুর অর্ডার রয়েছে। ওইদিন একসঙ্গে এত রাখি তৈরি করে ডেলিভারি দিতে পারব না। তাই আগে থেকে রাখি তৈরি করে ফ্রিজারে রেখে দিচ্ছি। এখন ফুলের দাম বেশি। তাই রজনীগন্ধা ও গোলাপ দিয়ে তৈরি রাখির দাম একটু বেশি রয়েছে।