খুলল ওপিডি, তিনদিন পর ডাক্তার দেখাতে পারলেন বাংলাদেশের বধূ
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি অব্যাহত। তবে সোমবার সিনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ দেন। স্বাভাবিক হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা। তিনদিন ঘুরে যাওয়ার পর এদিন ডাক্তার দেখালেন বাংলাদেশের বধূ কল্পনা খাতুন।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও সর্বত্র স্বাভাবিক নয়। তারমধ্যেই স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বেনাপোল দিয়ে শিলিগুড়িতে এসেছেন রংপুরের রুবেল ইসলাম। এদিন ডাক্তার দেখিয়ে তাঁরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। কল্পনা হিপ জয়েন্টে আঘাত পেয়েছেন। ক্র্যাচ নিয়ে কষ্ট করে চলাফেরা করেছেন। রুবেল বলেন, বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতি। তবুও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বেনাপোল দিয়ে গত ১৪ আগস্ট এপারে পৌঁছই। তারপর কলকাতা থেকে ট্রেন ধরে এনজেপিতে নেমে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কাছে ঘরভাড়া নিয়ে সেখানে উঠি। তিনদিন ধরে স্ত্রী’কে কষ্ট করে হাসপাতালে এনেও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। ডাক্তাররা আন্দোলনে ছিলেন। অবশেষে এদিন ডাক্তার দেখাতে পারলাম।
কল্পনা খাতুন বলেন, রংপুরের আমাদের বাড়ি। সেখানে সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। সেখানকার ডাক্তাররা জানান অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু, এই কঠিন অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা সরকারি হাসপাতালে নেই। ডাক্তাররা আমাদের ভারতে আসতে বলেন। আশা করছি, এখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরব।
কলকাতায় নেমেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আসার প্রসঙ্গে রুবেল বলেন, ২০১৯ সালে আমার কাকার কিডনি এবং কোমরের সমস্যা হয়েছিল। তাঁর স্নায়ুরও জটিল রোগ ধরা পড়েছিল। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসা করেই আমার কাকা এখন সুস্থ। সেই ভরসাতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা করানোর জন্য এসেছি। এখানে ভালো চিকিৎসার পাশাপাশি সবকিছুই আমার চেনাজানা রয়েছে। এদিন ডাক্তাররা জানান, আমার স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করতে হবে। এখানেই স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করাব। আমরা গরিব। প্রাইভেটে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ নেই।
এদিকে, এদিন আউটডোরের প্রতিটি বিভাগেই রোগীর ভিড় ছিল যথেষ্ট। গত কয়েকদিন ধরে ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে আউটডোর পরিষেবা লাটে উঠেছিল। ফলে বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যায়। আবার অনেকে চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে না জেনে আসেননি। চোপড়ার আনন্দ দাস সেরকমই একজন। তার পায়ে ক্ষত থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, অনেক আগেই আসা দরকার ছিল। কিন্তু, এসেও ডাক্তার দেখাতে পারব না, জেনেই আর কষ্ট করে আসিনি। এদিন সাতসকালেই চলে এসে সময় মতো ডাক্তার দেখিয়ে ফিরে যাচ্ছি।
এদিকে, আর জি কর কাণর প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি এদিন দশম দিনে দিনে পড়ল। তাঁরা প্রকৃত দোষীদের সকলকে গ্রেপ্তার এবং কঠিন শাস্তির দাবির পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বাংলাদেশি নাগরিক। - নিজস্ব চিত্র।