• আন্দোলন সামনে রেখেই অশান্তির গেরুয়া-প্ল্যান? নবান্ন অভিযান নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আড়ালে-আবডালে থাকলেও, লাখ চেষ্টা করেও আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদী সামাজিক আন্দোলনের মূল স্রোতে ‘অনুপ্রবেশ’ করতে পারছিল না গেরুয়া শিবির ও তাদের দোসররা। জুনিয়র ডাক্তার, সমাজকর্মী, শিল্পী-সাহিত্যিক সহ আন্দোলনকারী বিভিন্ন অংশের কাছে বিরোধী দলনেতা থেকে শুরু করে পদ্মপার্টির ছোট, বড়, মাঝারি নেতারা বারবার আর্জি জানিয়েছেন—‘একবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিন, বাকিটা বিজেপির উপর ছেড়ে দিন।’ মাত্র দু’মাস আগে রাজ্য তথা গোটা দেশে কার্যত প্রত্যাখ্যাত ‘বিভাজনপন্থী’ বিজেপির ডাকে সাড়া দেয়নি কেউ। এবার তাই শক্তিপ্রদর্শনে ‘ছদ্মনামে’ আসরে নেমে পড়ল গেরুয়া শিবির। ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ ব্যানারের আড়ালে ২৭ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। 

    বিরোধী দলনেতার আগাম ঘোষণা—‘ছাত্রদের আহ্বানে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হব ওই কর্মসূচিতে’। মূল এজেন্ডা স্পষ্ট হয়েছে সেই বক্তব্যেই। ময়দানে নেমে পড়েছে পদ্মপার্টি পোষিত ছোটখাটো মাধ্যমগুলিও। গোয়েন্দারা খবর পাচ্ছেন, নবান্ন অভিযানের নামে গত ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পুনরাবৃত্তির গেরুয়া-প্ল্যান কষা হয়েছে। ব্যাপক হাঙ্গামা, ভাঙচুর, অবরোধের পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই হাওড়ার পাঁচলার রানিহাটির এক ডেরা ও মধ্য কলকাতার এক আস্তানায় ‘বৈঠক’ও হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কোনওরকম অশান্তি তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে না তো? এ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন প্রশাসন।

    কারা এই ছাত্র সমাজ? খোঁজ চালাচ্ছে সবাই। বিশেষ করে ইউজিসি নেট পরীক্ষার দিন, ছাত্র সমাজের নামে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্যোগ নিয়েছে যারা, তাদের নিয়ে কৌতূহল রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কথা বাদ দিলেও, এ রাজ্যে ছাত্র রাজনীতির ‘স্টেক’ রয়েছে যাদের, সেই এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, ছাত্র পরিষদের নবনিযুক্ত সভানেত্রী প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী কিংবা ডিএসওর রাজ্য সভাপতি মণিশঙ্কর পট্টনায়েক কেউই জানেন না, কারা ডাক দিল নবান্ন অভিযানের। ছাত্র সংগঠনগুলির নেতা-নেত্রীদের মতে, ইউজিসি নেট পরীক্ষার দিন যারা ছাত্র সমাজের নামে কর্মসূচি ঘোষণা করে, তাদের উদ্দেশ্যটা আর যাই হোক, প্রতিবাদে আন্দোলন কখনওই নয়। তবে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ সরকারের কথায়, ‘এটা আমাদের কর্মসূচি নয়, তবে নৈতিক সমর্থন রয়েছে। সবাইকে অংশ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

    হাইকোর্টের নির্দেশে আর জি কর কাণ্ডের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি কেন? প্রশ্ন তুলেছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যা করা যায়, সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন। উন্নাও, হাতরাস বা মণিপুর—তাহলে তো যোগী আদিত্যনাথ বা নরেন্দ্র মোদিরও পদত্যাগ করা উচিত!’ 
  • Link to this news (বর্তমান)