অর্ণব দাস, বারাসত: আর জি কর কাণ্ডে দত্তপুকুর রেল স্টেশন চত্ত্বরে বিজেপির প্রতিবাদ সভা চলাকালীন মদ্যপ অবস্থায় মাইক কেড়ে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা সৌমেন কাঞ্জিলাল ওরফে গোপাল কলকাতা পুলিশেরকর্মী হওয়ায় বিতর্ক আরও বেড়েছে। যদিও তিনি কোনও পদে নেই বলেই দাবি করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে। সেই দিন দত্তপুকুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম চত্বরে বিজেপির তরফে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ সভা চলছিল। দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হন আমডাঙা বিধানসভার আইএনটিটিইউসির সভাপতি সৌমেন কাঞ্জিলাল। অভিযোগ মদ্যপ অবস্থায় প্রতিবাদ সভামঞ্চের নিচ থেকে হম্বিতম্বি শুরু করেন। এর পর সটান সভামঞ্চে উঠে বক্তব্যের মাঝেই এক বিজেপি নেতার থেকে মাইক কেড়ে নেন। মাইক নিয়ে বলতে থাকেন, “এখানে যাঁরা রয়েছে তাঁদের সকলকেই বলছি, মহিলাদের সম্মান দিতে হবে। এটা মাথায় ঢুকিয়ে নিন।”
আরও অভিযোগ, প্রতিবাদ সভায় হাজির হওয়া এক বিজেপি কর্মীকে হুমকির সুরে বলেন, “এই যে বুড়ো হঠাৎই বিজেপি করছে! তা করছে, করুক। কিন্তু পরিবারের সম্মান যদি না রাখে, ওর পরিবারের লোকেরা আমার কাছে এসে ওর নামেই অভিযোগ করে বলে, তাঁরা যথাযথ সম্মান পাচ্ছেন না। সবাইকে বলে রাখলাম, তাহলে কিন্তু সেটা মেনে নেব না।” সোশাল মিডিয়ায় সেই সংক্রান্ত একটি ভাইরাল হতেই শোরগোল পরে গিয়েছে। তবে সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
একদিকে যখন আর জি কর কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য তথা দেশ। এই ঘটনায় হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সেই সময় কলকাতা পুলিশের এস আই তথা শাসক দলের আইএনটিটিইউসি নেতার এই কীর্তি সামনে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত বিজেপি নেতা প্রতীপ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘তৃণমূল নেতা গোপাল কাঞ্জিলাল ও তাঁর দলবল মদ?্যপ অবস্থায় এসে ওই প্রতিবাদ সভা বানচালের করার চেষ্টা করেন। সাধারণ মানুষ সজাগ থাকায় সেই চেষ্টা অবশ্য ব্যর্থ হয়েছে। তখনই আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কোনও কথায় গুরুত্ব না দিয়ে মঞ্চে উঠে দাদাগিরি শুরু করেন।’
যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা দাবি করেছেন, তিনি বিজেপির প্রতিবাদ সভায় কোনও দাদাগিরি দেখাননি। বিজেপি নেতৃত্বই আর জি করের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা করছিলেন। সেখানে গিয়ে শুধুমাত্র এই কুৎসার জবাব দিয়েছেন। এর বাইরে কিছুই হয়নি। এই প্রসঙ্গে সাংগঠনিক জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি সোমনাথ শ্যাম জানান, ‘উনি পুলিশকর্মী। নিজে মুখ বললেও উনি আইএনটিটিইউসি কোনও পদে নেই।’