• কলকাতায় টিকিট বেচে ৩ মাসে ৮০ কোটি আদায় মেট্রোর, প্রশ্নের মুখে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তিন মাসে শহরের পাঁচটি মেট্রো রুট থেকে যাত্রী ভাড়া খাতে ৮০ কোটি টাকা আয় করল রেল। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর— দেশের প্রথম মেট্রো করিডর থেকেই লক্ষ্মীলাভ হয়েছে বেশি। কারণ, যাত্রী সংখ্যা এই রুটে সবচেয়ে বেশি। মেট্রো তরফে জানানো হয়েছে, গত মে, জুন ও জুলাই মাসের যাত্রীদের পরিসংখ্যান থেকেই এই তথ্য উঠে এসেছে। এই সময়ে কলকাতার পাঁচ-পাঁচটি মেট্রো লাইনে সব মিলিয়ে ৫ কোটি ৩০ লক্ষ যাত্রী সফর করেছেন। যার মধ্যে ৪ কোটি ৬০ লক্ষ যাত্রী নর্থ-সাউথ রুটে যাতায়াত করেছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুন ও জুলাই মাসে কবি সুভাষ-দক্ষিণেশ্বর লাইনে যাত্রী সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ কোটি ৭০ লক্ষ এবং দেড় কোটি। তিন মাসে ভাড়া বাবদ ৮০ কোটি আদায় হলেও, যাত্রী পরিষেবার মান ক্রমেই তলানিতে ঠেকেছে বলে অভিযোগ। এসি বিকল, ছাউনিহীন প্ল্যাটফর্মে বৃষ্টির জল, অকেজো ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড, ঘোষণায় ত্রুটি সহ একাধিক যন্ত্রণা সইতে হয় যাত্রীদের। একইসঙ্গে কর্মী ঘাটতির কারণে বেশ কিছু স্টেশনে অধিকাংশ টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকে। সোম থেকে শুক্রবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে নাইট সার্ভিস চলাকালীন যাত্রীদের জন্য কোনও কাউন্টার খোলা থাকে না। কেবলমাত্র ডিজিটাল প্রযুক্তিতে টোকেন কিংবা স্মার্ট কার্ড কাটতে বাধ্য হন যাত্রীরা। অধিকাংশ যাত্রী সেই ব্যবস্থায় স্বাচ্ছন্দ্য নন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যাঁদের জন্য আয় বাড়ছে, সেই যাত্রীদের পদে পদে অসুবিধায় ফেলছে কেন মেট্রো রেল?       

    এই মুহূর্তে সচল বাকি চারটি মেট্রো রুট হল শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড, জোকা থেকে মাঝেরহাট এবং কবি সুভাষ থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (রুবি)। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের দু’টি রুটে যাত্রী সংখ্যা খানিকটা হলেও, বাকি দু’টি রুট কার্যত খাঁ খাঁ করছে। গত মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে সূচনা হওয়া দেশের প্রথম নদী তলদেশের মেট্রো রুটে গড়ে প্রতি মাস ১২ লক্ষ করে যাত্রী হচ্ছে। কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে সংযোগকারী এই রুটটি ক্রমে আরও জনপ্রিয় হবে বলে আশাবাদী রেল কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে অসমাপ্ত কাজ শেষ হলে যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে। অন্যদিকে, এই রুটের মতো মাসে ১১ লক্ষ যাত্রী বহন করছে শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ মেট্রো রুট। যদিও যাত্রীর আকাল রীতিমতো ভোগাচ্ছে জোকা-মাঝেরহাট মেট্রো রুটকে। গড়ে প্রতি মাসে ১২ হাজার যাত্রী চলাচল করছে এই লাইনে। গত মার্চে তারাতলা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রো পরিষেবা চালু হলেও যাত্রী খরা কাটছে না। যার জেরে কপালে ভাঁজ পড়েছে মেট্রো কর্তাদের। এতটা করুণ না হলেও কাঙ্খিত যাত্রীর অভাবে ভুগছে শহরের নবতম রুট কবি সুভাষ থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (রুবি)। এখানে যাত্রী সংখ্যা মাসে গড়ে ৩০ হাজার। পরবর্তীকালে রুটটি বেলেঘাটা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে যাত্রী সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
  • Link to this news (বর্তমান)