• নবান্ন অভিযানে অশান্তি এড়াতে সতর্ক প্রশাসন, পথে অতিরিক্ত ৪ হাজার পুলিশ
    প্রতিদিন | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নবান্ন অভিযানের নামে শহরে অশান্তি ঘটানো হতে পারে। চেষ্টা হতে পারে শহর স্তব্ধ করার। এমনই অভিযোগ কলকাতার গোয়েন্দাদের। এই গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতেই কড়া ব‌্যবস্থা নিচ্ছে লালবাজার। মঙ্গলবার শহরে যাতে কোনও গোলমাল না হয়, তার জন‌্য রাস্তায় নামছে অতিরিক্ত প্রায় চার হাজার পুলিশ। সাতটি জায়গায় থাকছে ব‌্যারিকেড। রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিশবাহিনীকে নির্দেশ দেবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকরাও। নামানো হচ্ছে জলকামান ও ‘বজ্র’। ড্রোনেও হবে নজরদারি। নবান্ন ঘিরে থাকবে হাওড়া কমিশনারেটের প্রায় দু’হাজার পুলিশ।

    মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে একটি সংগঠন। যদিও লালবাজারের কাছে খবর, অরাজনৈতিক সংগঠনকে সামনে রেখে আসলে বিজেপি এই অভিযানের নামে অশান্তি করতে পারে। তাই ধর্মতলা, হেস্টিংস ক্রসিং, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, হাওড়া ব্রিজ, রেসকোর্সের গেট, টার্ফ ভিউ, নবান্নের কাছে ব‌্যারিকেড করবে পুলিশ। তিনটি বলয়ে হবে ব‌্যারিকেড। গার্ডরেলের বলয় ভাঙলেও তার পরের বলয়ে থাকছে বাঁশের তৈরি সিজার ব‌্যারিকেড। তৃতীয় বলয়ে থাকছে ইস্পাতের গার্ড ওয়াল। তার অন‌্যপাশে থাকবে র‌্যাফের বিশেষ বাহিনী। প্রত্যেকটি ব‌্যারিকেডের দায়িত্বে থাকছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও যুগ্ম পুলিশ কমিশনার পদপর্যাদার আধিকারিক। সঙ্গে থাকছেন একাধিক ডিসি, অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট কমিশনার ও ইন্সপেক্টর। প্রত্যেকটি ব‌্যারিকেডে গড়ে থাকছে ৫০০ থেকে ৬০০ পুলিশ। প্রথমে ঘোষণা করে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলা হবে। গার্ডরেল ভাঙার চেষ্টা হলে জলকামান বা রবার বুলেট ব‌্যবহার করা হতে পারে।

    রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘২৭ আগস্ট পরীক্ষা রয়েছে। সেদিনই গন্ডগোল করার চেষ্টা রয়েছে। তার জন‌্য বাড়তি পুলিশের পোষাক তৈরি হয়েছে, যাতে পুলিশকে ভুলভাবে তুলে ধরা যায়। এগুলো বারবার পরীক্ষা করা দরকার, নজরদারি দরকার। পুলিশের পোশাকে গুন্ডারা গোলমাল করবে। বিশেষ গ্রুপ পুলিশের বেশে ট্রেনে, বাসে অন‌্য রাজ‌্য বা অন‌্য জেলা থেকে এখানে ঢুকছে। এখানে কড়া নজরদারি দরকার। বাংলায় অরাজকতা তৈরির জন‌্য ২৭ আগস্ট গন্ডগোল করার চেষ্টা করছে।’’ এদিন সোশ‌্যাল মিডিয়ায় কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ন’টা থেকে দুপুরে সাড়ে বারোটা ও বিকেল তিনটে থেকে সন্ধ‌্যা ৬টা পর্যন্ত ইউজিসির নেট পরীক্ষা হবে। সেদিনই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। কারও যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে অসুবিধা না হয়, তার জন‌্য রাস্তায় থাকছে পর্যাপ্ত পুলিশি ব‌্যবস্থা।

    পুলিশের এক আধিকারিক জানান, প্রথমেই চেষ্টা করা হবে যাতে লাঠি চালাতে বা কাঁদানে গ‌্যাস ছুড়তে না হয়। কোনওপক্ষের কেউ যাতে আহত না হন, তাই থাকছে পুলিশের লক্ষ‌্য। কিন্তু তার উপরও কেউ গোলমাল করার চেষ্টা করলে জলকামান ব‌্যবহার করে জলের তোড়ে জনতাকে সরানোর চেষ্টা হবে। যাতে রাস্তা থেকে কেউ ইট বা পাথর কুড়াতে না পারেন, তাই সোমবার রাতের মধ্যে রাস্তার দু’পাশে ইট বা পাথর পরিষ্কার করে দেওয়া হবে। যদি কেউ নিজেদের সঙ্গে ইট বা কোনও অস্ত্র নিয়ে আসেন, সেই দৃশ‌্য ড্রোন বা রাস্তার সিসিটিভি ক‌্যামেরায় ধরা পড়লে সেই ব‌্যক্তির বিরুদ্ধে কড়া ব‌্যবস্থা নেবে লালবাজার। পুলিশের অনুরোধ, পরীক্ষার্থী বা অন‌্য কেউ অসুবিধায় পড়লে যেন তিনি পুলিশের সাহায‌্য নেন। ১০০ ডায়াল করলে অথবা নিকটবর্তী থানায় যোগাযোগ করলেই ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)