• ‘আন্দোলনের নামে লাশের রাজনীতি, যথাসময়ে প্রমাণ দেব’, বলছে কলকাতা পুলিশ
    প্রতিদিন | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • গৌতম ব্রহ্ম: আন্দোলনের আড়ালে ছিল চক্রান্ত। ছিল বাইরের মদত। লাশের রাজনীতির ছক কষে রাজ্য়কে অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করা হয় গণতান্ত্রিক অধিকারের নামে। আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল দুষ্কৃতীরা। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযান নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সাফ জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, বড়সড় গন্ডগোলের ছক ছিল। সেই পরিস্থিতি এড়াতেই গতকাল থেকে অন্তত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের অনেকের কাছ থেকেই বোমা-গুলি উদ্ধার হয়েছে। একই কথা শোনা গিয়েছে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মার গলাতেও।

    মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান ঘিরে কলকাতা ও হাওড়ায় ধুন্ধুমার বাঁধে। পুলিশের অনুমতির তোয়াক্কা না করে জমায়েত হয়। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভাঙেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে বলে মত পুলিশ কর্তাদের। এ প্রসঙ্গে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ ও যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের কর্মসূচি ছিল। আমরা অনুমতি দিইনি। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট খবর ছিল, সাধারণ মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে কিছু দুষ্কৃতী অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করবে। আজকে সেই আশঙ্কা সত্যি হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “গতকাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। আরও অনেককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। গতকাল রাতে হাওড়া স্টেশন গ্রেপ্তার ৪। তারা খুনের পরিকল্পনা করেছিল। অস্ত্র, বোমা, গুলি নিয়ে অশান্তি পাকানোর ছক ছিল।” এর পরই তাঁর দাবি, ধৃতদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। যথাসময়ে সেই প্রমাণ দেওয়া হবে। সুপ্রতিম আরও দাবি করেন, “কাল লাশ ফেলতে হবে। বডি ফেলতে হবে। এই ধরনের আলোচনা হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক গ্রুপে পেয়েছি।”

    আন্দোলনের নামে নবান্ন অভিযানে তাণ্ডবের অভিযোগ এডিজি দক্ষিণবঙ্গের। তিনি বলেন, “আন্দোলনকারীরা সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দানে পুলিশের অনুরোধ না শুনে ব্যারিকেড ভাঙা, গার্ডরেল ওলটানো, ইট-পাথরবৃষ্টি, পুলিশকে মারধর করা, গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাণ্ডব করেছে। বাংলায় শান্তি বজায় রাখতে চূড়ান্ত সংযমের পরিচয় দিয়েছে পুলিশ।” তিনি দাবি করেছেন, সোমবার রাত থেকে এদিন ভোর পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তা করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র-সহ। এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মা দাবি করেছেন, এ দিনের গোলমালে ৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ। কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ১২৬ জনকে। তাঁদের মধ্যে ২৩ জন মহিলা।পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে নেমে অন্তত ১১  পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।

    এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ ভার্মা বলেন, “যারা চক্রান্ত করেছে, দলমত নির্বিশেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষ ফাঁদে পা দেননি। আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।”  বুধবার ধর্মঘটের নামে যারা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি এডিজি আইনশৃঙ্খলার। 
  • Link to this news (প্রতিদিন)