রাজা দাস, বালুরঘাট: ধর্ষণ করে খুনের চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার আদিবাসী নির্যাতিতা নাবালিকা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। দোষীর কঠোরতম শাস্তির দাবি তুললেন মন্ত্রী। আদিবাসী সম্প্রদায়ভূক্ত নির্যাতিতা ও তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি, একই ইস্যুতে এদিন বংশীহারীতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসীরা। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘন্টা বন্ধ ডাকা হয়েছে আদিবাসী যৌথ মঞ্চের তরফে। অন্যদিকে, এই ঘটনায় ধৃতের বাবা তৃণমূল বুথ সভাপতি নয় বলেই দাবি ঘাসফুল শিবিরের। রাজনীতি করতে বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছে বলেই পালটা অভিযোগ তোলেন তৃণমূল জেলা সভাপতির। যা নিয়েই দিনভর চরম উত্তেজনা দেখা দেয় জেলাজুড়ে।
শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আসেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। সেখানে চিকিৎসাধীন পঞ্চম শ্রেণির পডুয়া নির্যাতিতা নাবালিকার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পুরো ঘটনা সবিস্তারে শোনেন ওই বালিকার পরিবারের মুখ থেকে। এদিন আদিবাসী মহিলা নেত্রী তথা মন্ত্রী বীরবাহার সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল, মহিলা তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্নেহলতা হেমব্রম-সহ অনান্য তৃণমূল নেতা নেত্রীরা। ঘটনা নিয়ে বিজেপি রাজনীতি শুরু করেছে বলে এদিন হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তিনি বলেন, “আদিবাসী নাবালিকার উপর এই নির্যাতন যে করেছে সে মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। তার কঠোর শাস্তি হোক। এই পশুরূপী মানুষদের কোনও জাতি, ধর্ম, রং হয় না।” এদিকে, এই ঘটনায় তৃণমূলের লোক জড়িত বলে বিজেপি রাজ্য সভাপতির টুইটকে কটাক্ষ করেন তিনি। বীরবাহা বলেন, “ওরা সব জায়গায় রাজনীতি খুঁজে বেরোচ্ছেন। বিজেপি চাইছে না দোষীরা সাজা পাক।”
বলে রাখা ভালো, এই ঘটনায় আগেই লেগেছে রাজনীতির রং। ধৃত অভিযুক্ত প্রিয়নাথ রাজবংশীর বাবা নরেশ রাজবংশী স্থানীয় তৃণমূল বুথ সভাপতি বলে যে প্রচার হয়ে আসছিল তা মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রথম থেকেই বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছিল বলে জানান তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল। তিনি বলেন, “অভিযুক্তর বাবা কোনওকালেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি নিজে ওই এলাকার বাসিন্দা। সেখানে ৪ বছর ধরে বুথ সভাপতি রয়েছেন ইসরাইল মিঞা। বরং ধৃত ও তার বাবা লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করেছে। এখন বিজেপি জোর করে ধৃতর বাবাকে তৃণমূলের বলে চালানোর চেষ্টা করছে।”
এদিকে, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পথে নামে আদিবাসী সংগঠনগুলি। আদিবাসী যৌথ মঞ্চের ব্যানারে শুক্রবার দুপুরে দৌলতপুরের ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়কের যান চলাচল। আন্দোলনকারীদের দাবি এই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে দ্রুত শাস্তি দিতে হবে। দিনভর চলা সেই অবরোধ ওঠে পুলিশি আশ্বাসে। এদিকে, সোমবার ১২ ঘন্টা বন্ধ ডাকার ব্যাপারে তারা আলোচনা করছেন বলে জানান আদিবাসী যৌথমঞ্চের নেতা গৌতম হেমব্রম।