• এসএসকেএমে ৩ ঘণ্টা রোদে দাঁড়িয়ে হৃদরোগী! মাত্র একজন চিকিৎসক থাকায় ব্যাপক ভোগান্তি
    বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ক্রমে চেনা ছন্দে ফিরছে শহরের সরকারি হাসপাতালগুলি। কর্মবিরতি চলাকালীন রোগীসংখ্যা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। শুক্রবার ছবিটা ছিল অন্যরকম। আর জি কর হাসপাতালে এদিন ওপিডিতে এসেছিলেন দু’হাজার ২৬৬ রোগী। ভর্তি হন ৪৯জন। জরুরি বিভাগেও এসেছিলেন ৪৯ জন। এসএসকেএম হাসপাতালের চিত্রটাও একইরকম ছিল। দুপুর দু’টোয় কার্ডিওলজি ওপিডিতে লম্বা লাইন। সেই লাইনে দাঁড়িয়েই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। সকলেই কম করে দু’থেকে তিন ঘণ্টা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে কাহিল। এসএসকেএম হাসপাতালে আসা অনেকের অভিযোগ, কার্ডিওলজি ওপিডিতে মাত্র একজন ডাক্তারবাবু রয়েছেন। 

    জামাইবাবুকে নিয়ে পাঁশকুড়া থেকে সকাল আটটায় এসএসকেএমে এসেছিলেন শেখ আমিরুদ্দিন আলি। তিনি বলেন, ‘আট আগস্ট এসেছিলাম। তখন হাসপাতাল থেকে বলল, ৩০ তারিখ আসতে। সেদিন দেখে তবে ভর্তি নেবে। আজ প্রথমেই কার্ডিওলজি জরুরি বিভাগে গেলাম। সেখান থেকে টিকিটও করতে বলল। তা করে সেই ন’টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। এখন এই দু’টোর সময় ভিতরে যাওয়ার সুযোগ মিলল।’ আমিরুদ্দিনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শিখা দাস। তিনি বলে উঠলেন, ‘আমার স্বামী ডেন্টাল হাসপাতালের কর্মী। আমরা সেই দু’ঘণ্টা হল লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।’ হুগলির হরিপাল থেকে ১২ বছরের ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন সুরাইয়া বেগম। তিনি বললেন, ‘সাড়ে বারোটা থেকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। লাইন কিছুতেই দেখি এগচ্ছে না।’ মুর্শিদাবাদের গুলনিহার বিবি বললেন, ‘সমস্যা তো আমাদের হচ্ছেই। তদন্তে কী হচ্ছে? বিচার হলে তবে হয়রানি বন্ধ হবে।’ এতদিন আর জি করের ওপিডির গেট বন্ধ থাকত। এদিন ওপিডির গেট যাতায়াতের জন্য সামান্য খুলে রাখা হয়েছিল। কম সংখ্যক চিকিৎসক থাকলেও রোগী সংখ্যা ছিল বেশি। 

    তবে এসএসকেএমের জরুরি বিভাগ এদিনও হতাশ করল রোগীদের। মুর্শিদাবাদ থেকে রাত দু’টোয় বাবাকে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন নিউটন মণ্ডল। এদিন বিকেলে বাবাকে নিয়ে এসএসকেএমের জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, ‘সেই রাতে প্রথমে এখানেই এসেছিলাম। বলল, ওপিডিতে দেখাতে। বাবা তো কথাই বলছে না তখন। তারপর এনআরএসে গেলাম। সেখানে বলল, বেড নেই। একটা বেসরকারি হাসপাতালেও গিয়েছিলাম। প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকা লাগবে বলল। আবার এখানে এলাম। এবার এখানেও বেড নেই। বলল শম্ভুনাথ পণ্ডিতে যেতে।’ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন নিউটন। বললেন, ‘কেন এখানে নিচ্ছে না, বলতে পারেন? বাবার শরীরের কী অবস্থা দেখুন!’ 

     
  • Link to this news (বর্তমান)