তরুণী চিকিৎসকের ‘জাস্টিস’ চেয়ে যখন পথে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ, তখন ইলিশ উৎসব করছেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। যে বিষয়টিকে একেবারেই ভালো চোখে দেখলেন না তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে যেভাবে সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন, সেই আবহে এরকম ইলিশ উৎসবের আয়োজন না করলেই ভালো হত। যদিও তাতে পাত্তা দেননি বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। রিপোর্ট অনুযায়ী, পরেশ পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন যে এজন্য কি কারও বাড়িতে বিয়ে বা অন্নপ্রাশন হবে না?
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং মৃত্যুর পরে ২২ দিন কেটে গিয়েছে। আপাতত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিচারের দাবিতে পথে নামছেন সাধারণ মানুষ। আজও কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। সেই আবহেই পরেশের উদ্যোগে ইলিশ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
সেই বিষয়টি নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি, ইলিশ উৎসবে আমায় আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। নিশ্চয়ই জীবন থেমে থাকবে না। একদিকে ন্যায়বিচারের দাবি চলবে। আন্দোলন চলবে। পাশাপাশি জীবনের অন্যান্য কাজগুলি আস্তে-আস্তে ফিরে আসবে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রক্তদান চলতে পারে, কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা চলতে পারে, স্বাস্থ্যশিবির, শিল্পকলার কিছু চলতে পারে। ইলিশ উৎসবে যেতে আমার মন সায় দেয়নি। সেজন্য আমি যাইনি।’
শুধু তাই নয়, ইলিশ উৎসবের ব্যানারে আবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সেই বিষয়টি নিয়ে কুণাল জানান যে এই ছবি ব্যবহারের জন্য মমতা বা অভিষেকের থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন না। মমতা এবং অভিষেক হয়ত জানেনও না যে তাঁদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
আর কুণালের সেই সমালোচনায় চটেছেন পরেশ। টিভি নাইন বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেলেঘাটার বিধায়ক পালটা প্রশ্ন করেছেন যে এজন্য কি কারও বাড়িতে বিয়ে হবে না? কারও বাড়িতে অন্নপ্রাশন হবে না? সেইসঙ্গে কটাক্ষ করে কুণালকে ‘বড় লিডার’ বলেছেন বেলেঘাটার বিধায়ক।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, ‘সারা রাজ্য উত্তাল। সর্বত্র হয় শোকের, নয় ক্রোধের পরিবেশ, আর কিছু তৃণমূলের নির্লজ্জ নেতা মমতা-অভিষেক আর ইলিশ মাছের ছবি একসঙ্গে দিয়ে ইলিশ উৎসব নামক ফূর্তি করছেন। আপনাদের ধিক্কার জানাই।’