অভয়া এবং সঞ্জয়ের পায়ের ছাপই নেই সেমিনার রুমে? থ্রি-ডি ম্যাপিংয়ের পর ইঙ্গিত সিবিআইয়ের
বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনাস্থল সেমিনার রুম। আর সেখানেই পায়ের ছাপ মেলেনি সঞ্জয়ের? রহস্যের শেষ এখানেই নয়। কারণ, সেমিনার রুমে ‘অভয়া’র পায়ের ছাপও পাওয়া যায়নি বলে চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআইয়ের। থ্রি-ডি ম্যাপিংয়ের পর তারা নাকি এমনই সিদ্ধান্তে এসেছে। আর তাতেই জটিলতা আরও বাড়ছে আর জি কর তদন্তে। কারণ, এই তত্ত্বে ঘটনাস্থল নিয়েই আরও একবার প্রশ্ন তুলে দিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এক্ষেত্রে দু’টি সম্ভাবনা থাকতে পারে। প্রথমত, ধর্ষণ-খুনের পর বহু লোক সেমিনার রুমে ঢুকে আসায় মৃতা এবং অভিযুক্তের ফুটপ্রিন্ট মুছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, সেমিনার রুম ঘটনাস্থলই নয়। অন্য কোনও তল বা ঘরে খুনের পর সেমিনার রুমে এনে রাখা হয়েছিল অভয়াকে। প্রশ্ন থাকে এখানেও—তাহলে করিডরের সিসি ক্যামেরায় তা ধরা পড়ল না কেন?
খুনের ঘটনায় আততায়ীর সংখ্যা নিশ্চিত করতে হাত ও পায়ের ছাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে কী ধরনের জুতো তারা পরেছিল, সেটাও জানা যায়। সিবিআই দাবি করেছে, প্রথাগত পদ্ধতি তো বটেই, থ্রি ড্রি ম্যাপিংয়েও এই দু’জনের পায়ের ছাপ তারা পায়নি। অথচ ওই হলের লাগোয়া দু’টি ঘরে তরুণীর ফুটপ্রিন্ট মিলেছে। সেখানে আরও বেশ কয়েকজনের পায়ের ছাপ পেয়েছে সিবিআই। এটাই রহস্য বাড়িয়েছে। সেমিনার হলে নমুনা না মেলার কারণ হিসেবে এজেন্সির ব্যাখ্যা, সেখানে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তা একটাই। নির্যাতিতার দেহ মেলার পর এলাকা ঘেরা না থাকায় একাধিক ব্যক্তি হুড়মুড়িয়ে দেহের কাছে গিয়েছে। তাঁদের পায়ের ছাপে নির্যাতিতা ও সঞ্জয়ের ফুটপ্রিন্ট নষ্ট হতে পারে। একাধিক ব্যক্তির পায়ের ছাপে আলাদাভাবে ওই দুজনের নমুনা আলাদা করা যাচ্ছে না।
সিবিআইয়ের আরও দাবি, ঘটনাস্থল ঘুরে ও পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পরই সন্দেহ দানা বেঁধেছিল। রহস্য আরও বাড়ায় সিভিক সঞ্জয়ের বয়ান। ঘরে ঢুকে সে নাকি তরুণীকে পড়ে থাকতে দেখেছিল। ধাক্কা দেওয়ার পর সাড়া না মেলায় ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। তখনই হোঁচট খেয়ে তার নেকব্যান্ড মেঝেয় পড়ে যায়। সিবিআইয়ের দাবি, পরে এত লোক ঘরে ঢোকায় সেই নেকব্যান্ড পায়ের ধাক্কায় অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার বদলে মৃতার ম্যাট্রেসের নীচে রাখা হল কীভাবে? উপরন্তু গোয়েন্দাদের দাবি, সঞ্জয়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, তার দুই হাতের আঁচড় পুরনো। একমাত্র পিঠে ও মুখে নতুন আঁচড়ের দাগ আছে। তাতে রহস্য আরও বাড়ছে।