অর্ণব দাস, বারাসত: কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যার মতো নারকীয় ঘটনা। দোষীর চরমতম শাস্তি চেয়ে সুবিচারের দাবিতে গর্জে ওঠাই স্বাভাবিক, স্বতঃস্ফূর্ত। আর যেখানে কর্মস্থলই সুরক্ষিত নয়, সেখানে কীভাবে দিনরাত কাজ করা যায়? তাই নিরাপত্তা না থাকলে কাজও করবেন না ? সাফ এই দাবিতে কর্মবিরতি জারি রাখছে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। এখনও অনেক হাসপাতালেই ঠিকমতো পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ উঠছে রোগীদের তরফে। তারই মাঝে পরিষেবা চালু করার আবেদন জানিয়ে বিতর্কে জড়ালেন অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। কর্মবিরতি জারি রাখা জুনিয়র ডাক্তারদের তিনি তুলনা করলেন চিনের জুতো শ্রমিকদের সঙ্গে!
শনিবার গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে একটি ক্লাবের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। উৎসবের মাঝেও সেখানে আর জি কর ইস্যুর আঁচ। ব্যানারে আর জি করের ঘটনায় সুবিচার, দোষীদের ফাঁসির দাবি তুলে স্লোগান লেখা। এই মঞ্চ থেকে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার সুবিচারের দাবিতে সরব হন বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীও। পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবা সচল রাখতে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ইতি টেনে কাজে ফেরার কথাও বলেন।
এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর বক্তব্য, ”যাঁরা জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনরত, তাঁদের কাছে মানবিকভাবে আবেদন জানাব, দয়া করে আপনারা হাসপাতালে ফিরুন। সাধারণ মানুষ হয়রানি হচ্ছে, মারা যাচ্ছে। আপনারা নোবেল প্রফেশনে আছেন। চিনে দেখেছিলাম, জুতো শ্রমিকরা আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু কারখানা বন্ধ করে নয়। তাঁরা বাঁ পায়ের জুতো তৈরি করেছিলেন। ডান পায়েরটা নয়। তাই আন্দোলন বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে।”
তৃণমূল নেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতির এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিতর্ক আরও উসকে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য বিজেপির সদস্য তাপস মিত্রর প্রতিক্রিয়া, ”জুনিয়র ডাক্তাররা তো বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। আর জি করের নারকীয় ঘটনা কার মদতে হয়েছে, আগে সেটা পরিষ্কার করুন নারায়ণ গোস্বামী।” একইসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, আগে বামফ্রন্টের নেতারা কথায় কথায় চিন, রাশিয়া টেনে আনতেন। এখন সেই অভ্যাসটা তৃণমূলের নেতাদের মধ্যেও ঢুকেছে।