• তিন বছরও হয়নি, বড় বড় অঙ্ক নিমেষে করে ফেলছে বিস্ময় বালিকা
    বর্তমান | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বয়স ২ বছর ৭ মাস। এখনও সে স্কুলের মুখই দেখেনি। পড়েনি কোনও বই। কিন্তু নিমেষেই বড় বড় অঙ্কের সমাধান করে দিচ্ছে পাত্রসায়রের বীজপুর গ্রামের বিস্ময় বালিকা বিদিশা মণ্ডল। শুধু অঙ্কই নয়, ওই বয়েসে সে ইংরেজি ও বাংলায় বড় বড় শব্দ স্লেটে লিখে ফেলছে। আর ওই ঘটনা চাউর হতেই বিদিশার বাড়িতে ভিড় জমছে। একটিবার অঙ্কের কেরামতি দেখতে প্রতিবেশীদের আব্দারে বারবার স্লেট নিয়ে বাড়ির দাওয়ায় বসতে হচ্ছে। তাতে অবশ্য চঞ্চল স্বভাবের বিদিশা বেশ বিরক্তও হচ্ছে। কিন্তু একবার বসলে মূহূর্তের মধ্যে বড় বড় অঙ্কের উত্তর লিখে ফেলছে। তাই দেখে কেউ বলছেন মানব-কম্পিউটার। কেউ বলছেন, গরিবের ঘরে রত্ন জন্মেছে। 

    বিদিশার মা সন্তোষী মণ্ডল বলেন, হাসপাতালে সিজার করে বিদিশার জন্ম হয়। তারপর স্বাভাবিকই ছিল। দশদিন আগে প্রথম ওর মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করি। ওর মধ্যে প্রখর স্মৃতিশক্তি রয়েছে। তবে ভীষণ চঞ্চল। ওকে এখনও বই কিনে দিইনি। ওর দিদির বই নিয়ে মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করে। তিন বছর হলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। তাই এখন থেকে মুখে মুখে অ, আ এবং কিছু সংখ্যা শেখাতে গিয়ে আমরা অবাক। দেখি সে তো আগে থেকেই শিখে বসে আছে। বিদিশার জ্যাঠামশাই প্রবীর মণ্ডল বলেন, ছোট ভাইঝিটাকে ভগবান বাড়তি শক্তি দান করেছেন।    

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বীজপুর গ্রামের বাসিন্দা বিনয় মণ্ডল দিনমজুর। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্কুলে জ্বালানি বিক্রি করেন। মা গৃহবধূ। তাঁদের দুই মেয়ে। বড়ো মেয়ে বিপাশা একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট মেয়ে বিদিশা। এখনও বইয়ের মুখ না দেখলেও মুখে মুখে বলা বর্ণপরিচয়ের নানা শব্দ অতি সহজেই সে বলে দেয়। এরপর কৌতূহলবশত বইয়ের বাইরে বিভিন্ন জিনিসের একবার নাম বলে দিলেই সেটা সহজেই মনে রাখতে পারছে। এছাড়াও বিভিন্ন সংখ্যাও চটপট স্লেটে লিখে দিচ্ছে। কয়েক ঘর নামতাও মুখস্থ করে ফেলেছে। তখনও বিদিশার মধ্যে অস্বাভাবিকতা মনে হয়নি। বিদিশার এক দাদা কৌতূহলবশত তাকে যোগ করতে দিয়ে বাংলা সংখ্যার ফাঁকে ফাঁকে ইংরেজি সংখ্যা লিখে দেয়। সেটারও উত্তর লিখে দেয় সে। মেধার বিষয়টি পরিবারের লোকেরা বুঝতে পেরে শুরু করে তার পরীক্ষা। একের পর এক বড় বড় যোগ, গুণ, ভাগ নিমেষের মধ্যে করে ফেলে। মূহূর্তের মধ্যে গ্রামে তা চাউর হয়ে যায়। প্রতিবেশীরাও এসে পরীক্ষা নিতে শুরু করেন। প্রতিটি অঙ্কের উত্তরই বিদিশা নিমেষে লিখে দেয়।       
  • Link to this news (বর্তমান)