সুমন করাতি, হুগলি: হুমায়ুন কবীরের পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও তার জেরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকদের ‘খুনি ডাক্তার’ বলে আক্রমণ করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ। আর জি কর কাণ্ডে টানা কর্মবিরতি চালাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এবার কোন্নগরে যুবক মৃত্যুতে ‘জাস্টিস ফর কোন্নগর’ আওয়াজ তুলে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটলেন কল্যাণ। চিকিৎসকদের তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল সাংসদ স্লোগান তুলে বলেন, “বিক্রম মারা যাওয়ায় খুনি ডাক্তারদের বিচার চাই।” মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে বিক্রম ভট্টাচার্যের। পাশাপাশি, চিকিৎসার গাফিলতির জন্য যাঁরা মারা গিয়েছে তাঁদেরও বিচার চেয়ে বঙ্গ জাগরণ মঞ্চের ব্যানারে মিছিলে হাঁটে কোন্নগরবাসী।
আর জি কর মামলার শেষ শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বার বার কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার কথা বলেছেন। এই আবহে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। তাঁর বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার মিছিল করে কোন্নগরবাসী। সেখানে সাংসদ কল্যাণ বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই তিলোত্তমার মৃত্যুর বিচার চেয়েছি। কিন্তু ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে একজন তরতাজা যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুর বিচার কে করবে? ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে বিচার হওয়া দরকার। রাজ্যে বিনা চিকিৎসায় আরও অনেকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেই সব মৃত্যুর বিচার হওয়া প্রয়োজন।”
এর পরই জুনিয়র ডাক্তারদের আক্রমণ করে বলেন, ” যে ডাক্তারদের গাফিলতিতে এই ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। এঁরা কেমন ডাক্তার? যাঁরা নিজেদের জেদ বজায় রেখে মানুষকে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করছে। এরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও উপেক্ষা করছে? সরকারের কাছে আবেদন করব এটা দেখতে যাতে এরা পরীক্ষায় বসতে না পারেন।
বঙ্গ জাগরণ মঞ্চের ব্যানারে আয়োজিত এই মিছিলের অগ্রভাগেই মশাল হাতে অংশগ্রহণ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়(Kalyan Banerjee)। আর জি করে চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগে কোন্নগরের বিক্রমের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে এই মিছিল কোন্নগর থেকে শুরু হয়ে উত্তরপাড়া পর্যন্ত যায়। মিছিলে হাঁটেন বিক্রমের মা ও পরিবার-সহ বহু মানুষ।
কয়েকদিন আগে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।বুধবার এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যেকোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নির্যাতিতার দোষীদের কঠোরতম শাস্তি আমরাও চাই। তা বলে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা দিনের পর দিন কর্মবিরতি পালন করে যাবেন, এই জিনিস আর বরদাস্ত করব না।” তিনি আরও বলেন, “ডাক্তাররা সরকারি ভাতা-বেতন নিচ্ছেন, মানুষকে পরিষেবা দেওয়া তাঁদের দায়িত্ব, সেই জায়গায় আমরা হাত দিলে তখন কী হবে?”