জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চে হামলার ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বাম যুবনেতা কলতান দাশগুপ্ত ৷ তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে প্রথমে মামলা দায়েরের আবেদন করা হয় ৷ সেই আবেদনের ভিত্তিতে মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি ৷ বুধবার এই মামলার শুনানিতে কলতানের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে কলতানের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন যে, "অডিয়ো ক্লিপে থাকা কথপোকথন কখনই কলতানের সঙ্গে হয়নি। সঞ্জীব দাসের থেকে কোনো ফোন কলতান পাননি।" তারপর প্রশ্ন করেন, "যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেওয়া যায় যে কলতানের সঙ্গে সঞ্জীব দাসের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাহলেও যেখানে তিন বছরের কম সাজা রয়েছে সেক্ষেত্রে কি এভাবে গ্রেফতার করা যায়?" জামিনের আবেদন করেছেন কিনা জিজ্ঞাসা করে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে পাল্টা প্রশ্ন করেন বিচারপতি। তার উত্তরে বিকাশরঞ্জন বলেন, "নিম্ন আদালতে আমাকে পেশ করা হয়েছিল। সাত দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করা যায়নি।"
'কণ্ঠস্বর সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে কিভাবে গ্রেফতার করে পুলিস? আমি ফোন ধরলে কেউ যদি আমাকে এসব বলে তাহলে তার ভিত্তিতে কি আমাকে গ্রেফতার করা যায়?' বিচারপতির সামনে সেই ছুড়ে দেন কলতানের আইনজীবী। রাজ্যের আইনজীবীর পাল্টা দাবি, "সঞ্জীব দাস জেরায় কলতান দাশগুপ্তর নাম বলে। দুজনের কল রেকর্ড থেকে খতিয়ে দেখা হয়। দেখা যায় সঞ্জীবের ফোন থেকে কলতানের ফোনে ফোন গেছে। সঞ্জীবের বয়ানের ভিত্তিতে কলতানকে গ্রেফতার করা হয়।" পাশাপাশি, রাজ্যের আইনজীবী আরও জানায় যে সাক্ষ্য গ্রহনের সময় দুজনেই স্বীকার করেছেন তাঁদের কথোপকথনের কথা। দুজনেই জেরায় তাঁদের অপরাধ স্বীকার করেন। কলতান তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে আরও জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী।
এরপরই রাজ্যকে বিচারপতির প্রশ্ন করেন, "এই দুজনে কি ধরনের পরিকল্পনা করেছিল? তারা হামলা চালাবে যাতে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাইতো? কলতান দাশগুপ্তর অপরাধের কোন পূর্ব ইতিহাস আছে?" কলতানের আইনজীবী এর উত্তরে 'না' জানান। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, "কেউ প্রথমবারের জন্য কোনো অপরাধ করতেই পারেন।" বিচারপতি বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিপোর্ট পেশ করার কথা বলেন রাজ্যকে। ওইদিন সকাল ১০:৩০ টায় হবে পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত।