টানা বর্ষণ ও ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পুজোর মুখে। বুধবার হুগলিতে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে তোপ দাগেন তিনি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে এটাকে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বুধবার হুগলির পুরশুড়ায় পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। আরামবাগ মহকুমার খানাকুল, পুরশুড়া-সহ অন্যান্য জায়গা যাবেন তিনি। এরপর তাঁর মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। পুরশুড়ায় গিয়ে মমতা বলেন, ‘নিজেদের রাজ্যকে বাঁচাতে বাংলাকে ভাসিয়ে দিচ্ছে। এটা ম্যান মেড বন্যা।’ কেন্দ্রের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি।
হুগলির খানাকুলের কিশোরপুরে ২টি ও বন্দর এলাকায় ২ টি নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামে প্রবল গতিতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। আরামবাগের মলয়পুরে ও পুরশুড়ার কাদিপুরে মুন্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে প্লাবন ছড়িয়েছে গ্রামের পর গ্রামে। একতলা বাড়ির সমান জলে হাবুডুবু খাচ্ছে খানাকুল। ক্রমশই বাড়ছে জলস্তর। দামোদরের জলে প্লাবিত তারকেশ্বরের একাধিক গ্রাম। জলের তলায় কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি।
মঙ্গলবার ডিভিসি থেকে প্রায় দেড় লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলত, হাওড়ার নিম্ন দামোদর এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। উদয়নারায়ণপুরে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে বুধবার ভোর থেকে জল বাঁধ টপকে ঢুকতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে, হুগলির আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়ার পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। রূপনারায়ণ নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দিক থেকে শিলাবতী নদীর জল ও আরামবাগের দিক থেকে দ্বারকেশ্বর নদীর মিলিত জলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। এদিকে, বুধবার সকালে মাইথন ও পাঞ্চেত— দুই জলাধার থেকেই জল ছাড়া হয়েছে। মাইথন থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হলেও পাঞ্চেত থেকে কয়েক হাজার কিউসেক জল বেশি ছাড়া হয়েছে। যে কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।