নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রাতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে ইভটিজিংয়ের শিকার হলেন মহিলা পুলিস কর্মীরাই। অভিযোগ, উইনার্স টিমের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করে মদ্যপরা। অশালীন অঙ্গভঙ্গিও করা হয়। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোড়ন ছড়ায়। ঘটনার পরই কোতোয়ালি থানা থেকে চলে আসে বাড়তি পুলিস বাহিনী। অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিরা দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালায়। পুলিস সুপার খণ্ডবাহলে উমেশ গণপত বলেন, রাতে হাসপাতাল চত্বরে মদের আসর বসানো এবং কর্তব্যরত মহিলা পুলিস কর্মীদের কটূক্তি করায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগেও শহরে কর্তব্যরত মহিলা পুলিসকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এবার থেকে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বুধবার থেকে রাতে হাসপাতাল চত্বরে মহিলা পুলিসের সঙ্গে বাড়তি বাহিনী থাকছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
মেডিক্যালের সুপার কল্যাণ খাঁ’র কথায়, মহিলা পুলিস কর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণে অভিযুক্তদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকেও। আমরা সকল ঠিকাকর্মীকে পরিচয়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাশাপাশি মেডিক্যালে কর্মরত সব ঠিকাকর্মীর তথ্য পুলিসকে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ, মেডিক্যালের অধীন সদর হাসপাতালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব লাগোয়া পূর্ত (ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগের সামনে বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে মদের আসর বসেছিল। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ পুলিসের উইনার্স টিম হাসপাতালে টহল দিতে আসে। তখনই ওই আসর থেকে মহিলা পুলিসকর্মীদের উদ্দেশ্য করে কটূক্তি ও অশালীন অঙ্গভঙ্গি করা হয়। উইনার্স টিমের এক সদস্য বলেন, এর আগেও সদর হাসপাতাল চত্বরে মদের
আসর বসার ঘটনা চাক্ষুষ করেছি আমরা। তাড়া করলেই পালিয়ে যায় তারা। তবে মঙ্গলবার রাতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা এর আগে ঘটেনি। উর্দি পরা মহিলা পুলিসকর্মীদের যদি কটূক্তি করতে পারে ওরা, তাহলে সাধারণ মহিলাদের দেখে ওরা কী না করতে পারে!
অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় যারা মহিলা পুলিস কর্মীদের লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করে, তাঁরা একটি এজেন্সির নিয়োগ করা লোকজন। কীভাবে তাঁরা হাসপাতাল চত্বরে মদের আসর বসালেন প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। পূর্ত বিভাগের (ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র আব্দুল হাসান বলেন, কোনওভাবেই এসব বরদাস্ত করা হবে না। আমরা সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে ডেকেছি। তাদের স্পষ্ট বলে দেওয়া হবে, ওই রাতে যারা পুলিসের সঙ্গে এমনটা ঘটিয়েছে, তাদের অবিলম্বে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিতে হবে। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। মেডিক্যালের অতিরিক্ত সুপার সুরজিৎ সেন বলেন, হাসপাতাল চত্বরে এ ধরনের ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। - নিজস্ব চিত্র