• দ্বিতীয়কে প্রথমের স্বীকৃতি, গোল্ড মেডেল দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
    এই সময় | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সমাজবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর ফাইনাল পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ত্রুটিতে’ প্রথমের মর্যাদা হিসেবে গোল্ড মেডেল পেতে চলেছেন এক পরীক্ষার্থী। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই এই ব্যবস্থা। বিচারপতি কৌশিক চন্দের নির্দেশ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬-২০১৮ সালের স্নাতোকোত্তরে সমাজবিজ্ঞানে যিনি প্রথম হয়েছিলেন, তাঁকে তাঁর প্রাপ্য স্বীকৃতি দেওয়া হলেও দ্বিতীয় হওয়া আলিশা ওয়াহিদকেও একই স্বীকৃতি দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে।আদালত স্পষ্ট করে দেয়, কোনও প্রার্থী নিজে না চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় নিজে থেকে তাঁর খাতা রিভিউ করতেও পারে না। মামলাকারী আলিশার বক্তব্য ছিল, পরীক্ষায় যিনি প্রথম হন তিনি কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ বা সিজিপিএ অনুযায়ী ৭.২৯ পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন। কিন্তু নম্বর আরও বাড়তে পারে ধরে নিয়ে তিনি খাতা রিভিউ করান। তাতে ফল হয় উল্টো।

    দেখা যায় তাঁর নম্বর কমে সিজিপিএ ৭.২৩ হয়েছে। মামলাকারীর নম্বর ছিল সিজিপিএ-তে ৭.২৪। ফলে তিনি প্রথমের মর্যাদা পাওয়ার জায়গায় চলে যান। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে নতুন তৈরি বিধি অনুযায়ী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আলিশার খাতা রিভিউ করে। এবং তাঁর নম্বর কমে ৭.১৮ হয়। ফলে ফের প্রথম স্থান পেয়ে যান আগের প্রথম স্থানাধিকারীই।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন আলিশা। তাঁর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তীর বক্তব্য, চক্রান্ত করেই এই পদক্ষেপ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়। মামলাকারীর কোনও অনুমতি না নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাঁর খাতা রিভিউ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। যার এক্তিয়ার কর্তৃপক্ষের নেই। ন্যাচারাল জাস্টিসের ধারণা লঙ্ঘিত হয়েছে।

    যদিও বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করে, ২০১৮ সালের রিভিউ রুল অনুযায়ীই স্বতঃপ্রণোদিত রিভিউ করেছেন কর্তৃপক্ষ। যদিও মামলাকারীর আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেন, প্রথম হওয়া প্রার্থী রিভিউ করে তাঁর নম্বর কমে যাওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় ওই নতুন আইন করার কথা জানিয়ে তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করেছে।

    হাইকোর্ট রায়ে উল্লেখ করেছে, ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিল ২০১৮ সালের ওই বিধিকে ব্ল্যাঙ্কেট পলিসি হিসেবে না দেখে ঘটনার গভীরতা বুঝে তার প্রেক্ষিতে ব্যবহারের সুপারিশ করেছিল। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালের ওই বিধি কার্যকরী হয়েছে এমন কোনও নথিও দেখাতে পারেনি বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছে। আদালত জানিয়ে দেয়, স্বতঃপ্রণোদিত খাতা রিভিউ করার এক্তিয়ারও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।
  • Link to this news (এই সময়)